আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ব্যবসার সেতুবন্ধন স্থাপন ও দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হতে পারে বলে মনে করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। গতকাল শুক্রবার ( ২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ভিয়েতনামের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এই মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি ড.যশোদা জীবন দেবনাথ। ভিয়েতনামের ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট মান্যবর ভং দিন হুয়ে।
এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, বাংলাদেশ শিগগিরই এলডিসি গ্রাজুয়েশনের মাইলফলক স্পর্শ করবে। ইতোমধ্যে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছি। স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশকে আসিয়ান, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াসহ আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে একাধিক এফটিএ এবং পিটিএ চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি বলেন, ভিয়েতনামের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার এখন সময়ের দাবি। এতে বাংলাদেশের নতুন নতুন বাজারে প্রবেশ সহজতর হবে। বিশেষ করে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারে ভিয়েতনাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং ভৌগোলিক অবস্থানের আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ব্যবসার সেতুবন্ধন স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হতে পারে বাংলাদেশ।
ড. যশোদা জীবন দেব নাথ বলেন, ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে শুধু সার্বভৌমত্বের সংগ্রামের জন্যই সংযুক্ত নয়;বরং জাতি হিসেবে আমরা স্থিতিশীল, অধ্যবসায়ী এবং গতিশীল। এ বছর আমাদের দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি।
তিনি বলেন, বাণিজ্যের পাশাপাশি আমরা দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বাড়াতেও আগ্রহী।
ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ভং দিন হুয়ে তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মধ্যে অসাধারণ বন্ধুত্ব বিরাজ করছে। ভারতের পরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ভিয়েতনামের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক অংশীদার। সম্প্রতি দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। আমরা এই সম্পর্ককে আরো বহুদূর এগিয়ে নিতে চাই।
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারে ভিয়েতনাম চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ভিসিসিআই) এবং দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এদেশের সরকার ও এফবিসিসিআইয়েরর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলেও জানান তিনি। এসময় এফবিসিসিআইয়ের নেতৃবৃন্দকে ভিয়েতনামে ভ্রমণের আহ্বান জানান তিনি।
সৌজন্য সাক্ষাতের পরে বিকেলে ‘ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার উন্নয়নে নীতি ও আইন বিষয়ক ফোরাম’ শীর্ষক আলোচনা এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।