জাপানিজ অর্থনৈতিক অ ল স্থাপনে কাজের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় ২৭০ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অ ল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কর্তৃক জাইকার অর্থায়নে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাস্তবায়নাধীন এ অর্থনৈতিক অ ল স্থাপনে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে জাপানি প্রতিষ্ঠান টোয়া করপোরেশন।
বেজা সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে মূল চুক্তিমূল্য ছিলো এক হাজার ৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। কর ও ভ্যাটসহ প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াচ্ছে এক হাজার ৩৫১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন, মাটি ভরাটের কাজ বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ অন্যান্য কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ের ডিজাইনে প্রকল্প এলাকা হিসেবে ৪৯১ একর চিহ্নিত করা হলেও পরবর্তীতে এক হাজার একর বিবেচনায় ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের আওতায় তিনটি গ্র্যাভিটি ফ্লো পাম্পের (ক্যাপাসিটি দশমিক ৮৩ ঘনমিটার/সে) পরিবর্তে ইলেকট্রোমেকানিক্যাল স্লুইস গেটসহ ছয়টি পাম্প (ক্যাপাসিটি ৬.৩ ঘনমিটার/সে) স্থাপনের অবকাঠামো নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মূল চুক্তিতে ৪৯১ একর ভূমি উন্নয়নে মাটি ভরাটের প্রস্তাব করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আরও ৪১ একর ভূমি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় মাটির অবস্থা ভালো না হওয়ায় ভূমি উন্নয়ন কাজের গুণগত মান বাড়াতে অধিকতর কম্প্যাকশন নিশ্চিত করতে প্রি-ফেব্রিকেটেড ভার্টিক্যাল ড্রেইন (পিভিডি) স্থাপন করায় অধিক পরিমাণ মাটির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৯৯ একর জমির জন্য পিভিডি স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও পরবর্তীতে মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮ একর জমিতে পিভিডি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, মূল চুক্তির বাইরে প্রথম পর্যায়ে অধিগ্রহণ করা ৮৫ একর জমির পাশে অর্থনৈতিক জোনের বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে অস্থায়ী সীমানা (করোগেটেড শিট) নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে প্রকল্প এলাকার আয়তন বাড়ায় মূল প্রবেশ পথের নকশা, পানি সংরক্ষণ পুকুর ও খাল এবং পাম্পিং স্টেশনের ডিজাইন পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এছাড়া মূল চুক্তিতে ঢাল সংরক্ষণে (স্টেপ প্রোটেকশন) জি-ও ব্যাগ স্থাপনের কথা থাকলেও সরাসরি সূর্য তাপ ও উন্মুক্ত আবহাওয়ায় জি-ও ব্যাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অভ্যন্তরীণ বালু ধসসহ শিল্প ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিধায় পরে সিমেন্ট ও ড্রেজিং বালু দিয়ে সয়েল সিমেন্ট পদ্ধতিতে ঢাল সংরক্ষণ করা হয়েছে। জানা গেছে, বর্তমানে প্রকল্পের আওতায় শুধু ৮২ দশমিক ৪ শতাংশ মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রথম দিকে জাপান সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সব জাপানি নাগরিক নিজ দেশে ফেরত যাওয়ায় কারণে প্রকল্পের কাজ স্থগিত হয়ে পড়ে। পরে জাইকার গাইডলাইনের ভিত্তিতে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রকল্পের আওতায় ভূমি উন্নয়ন, সীমানা প্রাচীর ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ, রিটেনশন পুকুর, রিটেনশন খাল ও পাম্পিং স্টেশন নির্মাণের কথা রয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চে শুরু হওয়া প্রকল্পটির নির্মাণকাজ আগামী ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছে সরকার।