শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫০ অপরাহ্ন

গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যা দিবস পালন হত্যার সাথে জড়িতদের বিচার দাবি

শহীদুল ইসলাম (গোবিন্দগঞ্জ) গাইবান্ধা
  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩

‘সাঁওতাল হত্যা দিবস’ উপলক্ষে সোমবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটামোড় এলাকায় নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে গোবিন্দগঞ্জের জয়পুর গ্রামে নির্মিত অস্থায়ী শহীদবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, এক মিনিট নীরবতা পালন, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, প্রতিবাদী সংগীত পরিবেশন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। দিবসটি উপলক্ষে সকাল নয়টায় সাঁওতালপল্লীর মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে সাঁওতালদের ঐতিহ্য তির-ধনুক, কালো পতাকা, ব্যানার, বিভিন্ন দাবিদাওয়া সংবলিত ফেস্টুন নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ১০ কিলোমিটার পথ প্রদক্ষিণ করে গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের কাটামোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের শুরুতে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর প্রতিবাদী সংগীত পরিবেশিত হয়। তিন সাঁওতাল হত্যা, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের জমিতে তোলা বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগের বিচারের দাবিতে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, আদিবাসী-বাঙালী সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ ও জনউদ্যোগ গাইবান্ধা যৌথভাবে এসব কর্মসূচি পালন করে। সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নরেন পাহান, বাসদ নেতা জয়নাল আবেদীন মুকুল, আদিবাসী নেতা বিমল খালকো, অগস্টিন মিনজী, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব দীপন হাসান, মানবাধিকার কর্মী মনির হোসেন সুইট, আদিবাসী নেতা প্রিসিলা মুর্মু, সুফল হেমব্রম, গৌড় চন্দ্র পাহাড়ী, মাথিয়াস মার্ডি, বৃটিশ সরেন, তৃষ্ণা মুর্মু প্রমুখ। বক্তারা সাঁওতাল হত্যার বিচার, আসামিদের গ্রেপ্তার, গুলিতে আহত সাঁওতাল, বাড়ী ঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ক্ষতিপূরণ ও সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘যে কোন এলাকার উন্নয়নে ইপিজেড স্থাপন, সেই এলাকার মানুষের জন্য অবশ্যই সুখের খবর। কিন্তু সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্মের আদিবাসী ও বাঙালিদের বাপ-দাদার জমিতে সেখানকার ওয়ারিশগদের সাথে কোন ধরনের স্বাধীন, পূর্বাবহিত সম্মতি ছাড়াই ইপিজেড স্থাপনের ঘোষণা আদিবাসী-বাঙালি জনগণকে হতাশ করেছে।’ সাত বছরেও গাইবান্ধার তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার হয়নি উল্লেখ করে বিভিন্ন আদিবাসী-বাঙালী ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরের ঘটনার পর থেকে নির্যাতনের শিকার আদিবাসী সাঁওতালরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। গৃহহীন হয়ে তারা অসহায় দিনাতিপাত করছে। আহতরা চিকিৎসার অভাবে কেউ পঙ্গু, কেউ শরীরে গুলির স্পিøন্টার নিয়ে অসহ্য যন্ত্রনায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। সে সময় থেকে সরকারের পক্ষ থেকে নানা আশ্বাসের বাণী শোনালেও এখন পর্যন্ত তার কোনটিই আজও বাস্তবায়ন হয়নি।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com