রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন

জগন্নাথপুরে বোরো ধানের বীজ কিনতে দোকানে-দোকানে কৃষকদের উপচেপড়া ভিড়

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বোরো ধানের বীজ বিক্রির ধুম পড়েছে। বীজ কিনতে ডিলার ও দোকানে-দোকানে উপচেপড়া ভিড় করেছেন কৃষকরা। বীজ কেনাবেচা নিয়ে ডিলার ও কৃষকদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জগন্নাথপুর সদর বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে বীজ বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরাও তাদের পছন্দের বীজ কিনতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এতে কৃষকদের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে বেসরকারি প্রাইভেট কোম্পানীগুলোর হাইব্রিড জাতের বীজ। গত বছর ভালো ফলন হওয়ায় এবার কৃষকরা প্রাইভেট বীজের দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে সরকারি বস্তার বীজ নিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন ডিলাররা। সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুর সদর বাজারে বীজ ডিলার ও দোকানে নিজেদের পছন্দের বীজ কিনতে কৃষকরা রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়েন। বিক্রেতারাও বীজ বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার সরকারি বীজ বীনা ১০, বঙ্গবন্ধু ১০০, ব্রি-ধান ২৮, ২৯, ৮৪, ৮৮, ৮৯, ৯২ ও বেসরকারি হীরা ১, ২, ৬, ৯, জনকরাজ, সুবর্ণ ৪, ব্র্যাক ২, ১৭, ৭৭৭, শক্তি ২, ৩, যুবরাজ, বন্ধু, প্রজাপতি, রংধনু, ছক্কা, ইস্পাহানি ২৮, ২৯, ৮৯, ৯২, ৮৮, ২৬, সোনার বাংলা ৬, সিনজেন্ডা ১২০২, ১২০৫, সুগন্ধা, অগ্রনী ৭, আপ্তাব ১০৮, ৭০, নবীন, মাইক্রো ১, গোল্ডেন ১, মঙ্গল ১৯, সুরভী ১, গাজীপুর সহ প্রায় অর্ধশতাধিক জাতের ধান বীজ পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে সরকারি ১০ কেজির এক বস্তা বীজের মূল্য ৫৬০ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকায়। এতেও কিনতে আগ্রহী নন কৃষকরা। তবে সরকারি হাইব্রিড প্যাকেট সহ অন্যান্য বেসরকারি প্যাকেটজাত বীজ প্রতি কেজি ৩২০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি হওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও পছন্দের বীজ কিনতে প্রতিযোগিতা করছেন কৃষকরা। এ সময় বীজ কিনতে আসা কৃষকদের মধ্যে দিরাই উপজেলার টংগর গ্রামের আশরাফুল আলম, শান্তিগঞ্জ উপজেলার আক্তাপাড়া গ্রামের আবদুল্লাহ, সুজন মিয়া ও জগন্নাথপুর উপজেলার সোনাতনপুর গ্রামের ফয়জুল ইসলাম সহ অনেকে বলেন, গত বছর সরকারি ২৮ ও ২৯ জাতের বীজ নিয়ে মার খেয়েছি। প্রথমে জমিতে ভালো ফলন হলেও থোড় বের হওয়ার পর সাদা হয়ে মরে গেছে। এতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে প্রাইভেট কোম্পানীর বীজে ভালো ফলন পেয়ে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়েছি। যে কারণে এবার আর সেই ভূল করতে চাই না। তাই প্রাইভেট কোম্পানীর বীজ নিচ্ছি। মেসার্স মোয়াজ এন্টার প্রাইজ নামের বীজ ডিলার সাজু আহমদ বলেন, সরকারি প্যাকেটজাত ও বেসরকারি কোম্পানীগুলোর প্যাকেটজাত বীজ নিতে কৃষকরা বেশি আগ্রহী। সরকারি বস্তার বীজ কিনতে চান না। এর মধ্যে ২২ টন সরকারি বীজ আমদানি করে এখনো ২০ টন রয়ে গেছে। সরকারি বস্তার বীজ নিয়ে বিপাকে আছি। প্রতি বস্তায় ৪০ টাকা ভর্তুকি দিয়েও বিক্রি করা যাচ্ছে না। মেসার্স বিশাল ট্রেডাসের বেসরকারি কোম্পানীর বীজ বিক্রিয় প্রতিনিধি মিঠু রঞ্জন দাস জানান, বেসরকারি কোম্পানীগুলোর বীজ কিনতে কৃষকরা রীতিমতো প্রতিযোগিতা করছেন। জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, এবার জগন্নাথপুর উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ২০ হাজার ৩৪০ হেক্টর। এবার আবাদ হচ্ছে ২০ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমি। তিনি বীজ বিষয়ে বলেন, জগন্নাথপুরে বীজের কোন ঘাটতি নেই। তবে গত বছর রোগ বালাইয়ের কারণে ২৮ ও ২৯ জাতের ছোট ধানে কিছুটা ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা এবার আস্থা রাখতে পারছেন না। এবার ২৮ ও ২৯ জাতের পরিবর্তে সরকারি ব্রি-ধান ৮৮ ও ৯২ আবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জগন্নাথপুরে মোটা জাতের ধান বেশি আবাদ হয়। কৃষকদের চাহিদা মতো যে কোন ধান আবাদ করতে পারেন। তবে আমরা চাই বৈশাখে যেন বাম্পার ধান কৃষক ভাইদের গোলায় উঠে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com