নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে আগাম আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। উৎপাদিত আলু বিক্রি করে যেমন দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরিছেন তেমনি নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রাহকের চাহিদা মিটাচ্ছে আগাম আলু উৎপাদনে সূতিকাগার খ্যাত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা। আর এ উপজেলার কৃষক চড়া আলুর বাজারে আগাম নতুন আলুর সু-খবর এনেছেন। বাজারে চাহিদা এবং দাম বেশি থাকায় আগেভাগে উচুঁ সমতলভূমির মাঠে মাঠে আগাম আলু তোলার উৎসবে মেতে উঠেছেন কৃষক। ফলে আলু উত্তোলনকে ঘিরে কৃষক-ক্ষেত মজুর-ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানা যায়, প্রতি বছর এ উপজেলার ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষক আগাম আমন ধান ঘরে তুলে আগাম বাজার ধরার আশায় আগেভাগে আলুর বীজ বুনেন। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই ক্ষেতের আলু ক্ষেতে বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে।এছাড়া কয়েক দিনের মধ্যে পুরোপুরি মাঠ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হবে। অফিস সূত্রে জানা যায়-চলতি বছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়েছে।এর মধ্যে ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর আগাম আলু লাগানো হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়-আলুর মাঠে কেউ মাটি খুড়ছে,কেউ কুড়াচ্ছে। কেউ ঠেসে ঠেসে বস্তা ভরছে। কোথাও আবার ডিজিটাল মিটারে চলছে ওজন। ক্ষেতের মাঝে ভর্তি হচ্ছে ভ্যান. ট্্রলি, ট্্রাক। ক্ষেতের মধ্যে আলু তোলার এমন দৃশ্য উপজেলার বিস্তৃত মাঠ জুড়ে। উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নের কুঠিপাড়া গ্রামের কৃষক নুরুল আলীম মাষ্টার ২২শতক জমিতে আলু চাষ করেন। ৭৮টাকা কেজি দরে আলু ব্যবসায়ী নিকট জমিতে বিক্রি করে। যা খরচ বাদে দিগুন লাভের আশা করা হচ্ছে। একই গ্রামের হজরত আলী ৬২ শতক জমিতে আগাম আলু উত্তোলন করছেন। হযরত আলী বলেন ,বরাবরের মত চলতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বরে বুননকৃত জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ দিনে ফলনযোগ্য আগাম আলু উত্তোলন করছি।জমিতে নারী-পুরুষ মিলে ২৫জন শ্রমিক কাজ করছে। আগাম হিসেবে ফলন কিছুটা কম হলেও বাড়তি খরচ ছাড়াই ক্ষেতের আলু ক্ষেতে ৭৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলাম। কৃষক নুরুল আলীম মাষ্টার জানান, আগাম আলু চাষ করে ভাল লাভবান হই। এ বছরো উর্দ্ধমূখী দামের আশায় আগাম আমন ধান কাটামাড়াই করে সেই জমিতে আগেভাগে আগাম আলুর বীজ রোপণ করেছি। ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকে আলু কিনে নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সরবরাহ করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম বলেন, বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু হয়েছে। চলতি বছর অনূকুল আবহাওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন ও চড়া দাম পেয়ে কৃষক পরিবারে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। আগাম আলু আগাম ধান চাষ করে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে।