আকবর আলী’র নেতৃত্বে প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ট্রফি আসে বাংলাদেশে। ২০২০ এর সেই অর্জন অবশ্য পরের আসরে ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দল। তবে এবার সেই ট্রফি পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখাচ্ছে মাহফুজুর রহমান রাব্বি বাহিনী। শিরোপা ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে গতকাল রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জাতীয় দলের কোনও ম্যাচ নেই এখন। সেই হিসেবে নতুন বছরের শুরুটা হচ্ছে টাইগার যুবাদের বিশ্বকাপ চ্যালেঞ্জ দিয়ে। এশিয়া কাপ জেতার পর থেকে তাদের প্রতি প্রত্যাশাও এখন অনেকটা বেশি। বিশ্বকাপে জুনিয়র টাইগারদের নিয়ে ভালো কিছুরই প্রত্যাশা দলের অধিনায়কেরও। নিজেদের প্রতি আস্থা আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে যুব দলের অধিনায়ক রাব্বি বলেছেন, ‘আত্মবিশ্বাস অবশ্যই আছে। দলের অবস্থা ভালো।
দোয়া করবেন যেন ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। আমি শতভাগ সন্তুষ্ট। আমাদের দলের খেলোয়াড়রা আমাকে অনেক সহায়তা করছে। কোচ থেকে শুরু করে সবাই সহায়তা করে আমার কাজ সহজ করে দিচ্ছে।’
তবে যুব দলকে হঠাৎ করেই মুখোমুখি হতে হচ্ছে নতুন এক চ্যালেঞ্জের। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আসরের আয়োজক ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু আইসিসি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডকে নিষিদ্ধ করায় হঠাৎ করেই বদলে যায় ভেন্যু। এবার আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকা। যে কন্ডিশন ও উইকেটে খেলা খুব একটা সহজ নয়। তবে অধিনায়ক রাব্বি দারুণ আত্মবিশ্বাসী। তিনি এটিকে তেমন বড় কোন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেনও না। রাব্বি বলেন, ‘আমার মনে হয় না কোনো কিছু ওরকম কঠিন হবে। দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচের উইকেট আর দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট অনেকটা একরকম। আমার মনে হয় না এটা কোনো চ্যালেঞ্জ। একটা ম্যাচ খেললেই আর চাপ আসবে না।’ তবে ঝুঁকি তো আর নেয়া যায় না তাই আসর শুরুর ১১দিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য দেশ ছেড়েছে দল। আগামী ১৯শে জানুয়ারি শুরু হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট। রোববার রাত ১টা ৫ মিনিটে হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ত্যাগ করে মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল। দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছে এরপর তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশের যুবারা। যুব বিশ্বকাপ শুরুর পর দ্বিতীয় দিনেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ২০শে জানুয়ারি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে টাইগার যুবারা। বাংলাদেশ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে যুব ক্রিকেট দলের প্রথম ম্যাচটির ভেন্যু ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল । টুর্নামেন্টের এ গ্রুপে রাব্বিদের প্রতিপক্ষ হিসেবে আছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ড। ২০২০-এ ভারতকে হারিয়েই প্রথমবারের মতো এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ২২শে জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ২৬শে জানুয়ারি লড়বে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকার পাঁচটি ভেন্যুতে হবে এই বিশ্বকাপ আসর। ফাইনাল হবে ১১ই ফেব্রুয়ারি। সব মিলিয়ে মোট ৪১টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত যুব দলের ব্যাটিং কোচ ওয়াসিম জাফর। তিনি আগেই বলেছেন ছেলেদের নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী। অন্যদিকে ১১ দিন আগে সফরে যাওয়ার সুবিধা দেখছেন বোলিং কোচ নাজমুল হোসেন। যুব এশিয়া কাপ যেতাতে তিনিও আত্মবিশ্বাসী। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক পেসার বলেন, ‘এশিয়া কাপ জিতলেও কিছু কাজ করার জায়গা আছে। গত এক সপ্তাহ চেষ্টা করেছি এশিয়া কাপের ভুলত্রুটি শুধরে ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার। দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে আরও ২ সপ্তাহের মতো সময় পাবো। আমরা চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব মানিয়ে নেওয়ার। প্রক্রিয়া ঠিক রাখলে ভালো কিছুই হবে। কন্ডিশন চিন্তার কারণ হতে পারে, তবে যেহেতু ২ সপ্তাহ আগে যাচ্ছি, ওরা এতদিন ক্রিকেট খেলে পেশাদারিত্ব তৈরি করেছে। ভালো কিছু করার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’