এল ক্লাসিকো যখন পরিণত হয় শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে, স্বাভাবিকভাবেই তার উত্তাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। হলোও তাই। তবে ম্যাচে ছিল না আশানুরূপ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। লস ব্লাঙ্কোজদের কাছে যেন অসহায় ছিল বার্সালোনা। সুপার কাপের ফাইনালে তাদের হার ৪-১ গোলে। সৌদি আরবের কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামে রোববার রাতে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল বার্সালোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। যেখানে ভিনিসিউস জুনিয়রের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে শিরোপা পুনরুদ্ধার করে কার্লো আনচেলত্তির দল।
সুপার কাপের গত মৌসুমে রিয়াদেই রিয়ালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বার্সা। এবার তাদের হারিয়ে প্রতিশোধ নিল রিয়াল। স্প্যানিশ এই প্রতিযোগিতায় এটি রিয়াল মাদ্রিদের ১৩তম শিরোপা। প্রথমার্ধের পুরোটা জুড়ে ছিলেন ভিনিসিউস। নিজের ভয়ংকর প্রতিমূর্তি আরো একবার প্রকাশ্যে আনতে এই ম্যাচটাই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। ম্যাচের বয়স তখনো ১০ মিনিট হয়নি, এর আগেই দু-দু’বার উদযাপন করলেন গোল। বার্সাকে চমকে দিয়ে রিয়ালকে বসিয়ে দেন চালকের আসনে।
প্রথম গোলটি আসে ৭ম মিনিটে, জুড বেলিংহামের চোরা পাস ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন ভিনিসিউস, এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড। গোলের পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে স্মরণ করিয়ে দেন ভিনিসিউস, তাকে অনুসরণ করেই করেন ‘সিউ’ উদযাপন। তবে সেই উদযাপনের মাত্রা বেড়ে যায় খানিক বাদেই। বার্সা ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাওয়ার আগেই ৩ মিনিটের মধ্যে ব্যবধান ২-০ করেন ভিনি। দানি কারভাহালের লম্বা করে বাড়ানো বল ধরে রদ্রিগো বক্সে ঢুকে বাড়ান ভিনিসিউসের উদ্দেশে। দারুণভাবে তিনি তা পাঠিয়ে দেন জালের ভেতর। এমতাবস্থায় রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ে বার্সালোনা। আগ্রাসী হয়ে পরপর কয়েকটি আক্রমণে যায় তারা। যদিও কোনোটিই কাঙ্ক্ষিত গোল এনে দিতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৩৩ মিনিটে বার্সার হয়ে ব্যবধান কমান রবার্ট লেভানডফস্কি। বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন এই পোলিশ স্ট্রাইকার। পাঁচ মিনিট পরই অবশ্য দুই গোলের লিড পুনরুদ্ধার করেন ভিনিসিউস। নিজের আদায় করা পেনাল্টিতে এবার সফল স্পট কিকে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। ফলে ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় রিয়াল।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার আশায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনে বার্সা। যদিও বার্সার আক্রমণগুলো ছিল নির্বিষ। বিপরীতে ৬৪তম মিনিটে বার্সার ঘুরে দাঁড়ানোর আশা আরো কঠিন করে তোলে রদ্রিগো। দলকে ৪-১ গোলে এগিয়ে নেন তিনি। ভিনিসিউসের পাস থেকে অনায়াসে জাল খুঁজে নেন এই ব্রাজিলিয়ান। ঘুরে দাঁড়ানো তো দূর, ৭১তম মিনিটে আরেকটি ধাক্কা খায় বার্সেলোনা। ভিনিসিউসকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আরাউহো। ১০ জনের দল নিয়ে অলৌকিক কিছু করে দেখাতে পারেনি বার্সা। বড় হার নিয়েই শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়তে হয় দলটিকে।