তুলসীপাতা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এ কারণে বিগত কয়েক শতাব্দি ধরে এটি চিকিৎসাতেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই ভেষজ শুধু শারীরিক নয়, মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে। জানলে অবাক হবেন, তুলসীর পাতা ভিটামিনি এ, সি, কে, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়ামের মতো পুষ্টি উপাদান আছে। এতে আরও থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন আছে। তুলসীপাতা কাঁচা চিবিয়ে আবার চাইলে চা বানিয়েও পান করতে পারেন। শীতে যেহেতু সর্দি-কাশিসহ নানা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই এ সময় নিয়মিত দুই-তিনটি করে তুলসীপাতা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে আর নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, তুলসীপাতা খেলে আরও কী কী উপকার মিলবে-
মানসিক চাপ কমবে: তুলসী মানসিক চাপের জন্য একটি প্রশান্তিদায়ক বামের মতো কাজ করে। এতে এমন যৌগ আছে যা মনকে শান্ত করতে, স্ট্রেস ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ফিসিকো ডায়েট ও নান্দনিক ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা ডায়েটিশিয়ান বিধি চাওলার মতে, এই পাওয়ার হাউস ভেষজ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। যা ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, শরীরকে সংক্রমণ ও রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। দিনে এক কাপ তুলসী চা পান করলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগবে না।
শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: কয়েক শতাব্দী ধরে, তুলসীপাতা কাশি, সর্দি ও কফ জমার মতো শ্বাসকষ্ট দূর করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলো স্বস্তি দেয় ও শ্বাসযন্ত্রের ট্র্যাক্ট পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।
হজমে সহায়ক: তুলসী অ্যাসিডিটি কমিয়ে ও পেটকে প্রশমিত করে হজমে সাহায্য করে। এটি ফুলে যাওয়া, গ্যাস ও বদহজম কমাতে সাহায্য করে ও অন্ত্র ভালো রাখে।
ত্বকের জন্য উপকারী: তুলসীর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ত্বকের জন্য বিস্ময়কর কাজ করে। এটি ব্রণ, দাগসহ ত্বকের সংক্রমণের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে সাহায্য করে, যা আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর করে তুলবে।
মুখের স্বাস্থ্য: মৌখিক স্বাস্থ্যবিধির জন্যও এই জাদুকরী ভেষজটি চমৎকার। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো মুখের জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে, মুখের দুর্গন্ধ প্রতিরোধ করে ও সামগ্রিক মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখে: তুলসীপাতা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পাওয়া গেছে, যা ডায়াবেটিস পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের জন্য এটি উপকারী করে তোলে। আপনার খাদ্যতালিকায় তুলসী অন্তর্ভুক্ত করা স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।
মেজাজ ভালো রাখে: তুলসীর বৈশিষ্ট্যগুলো মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি একটি প্রাকৃতিক মেজাজ বর্ধক, যা মন ভালো রাখে ও পজিটিভ চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করে।
প্রদাহবিরোধী এজেন্ট: প্রদাহ অনেক অসুখের মূল কারণ। তুলসীর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে ও বিভিন্ন অবস্থা থেকে মুক্তি দেয়।
হার্টের স্বাস্থ্য: তুলসী নিয়মিত সেবন হার্টের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে বলে ধারণা করা হয়। এটি রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ও হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখে। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া