রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ অপরাহ্ন

দুর্গাপুরের এক রাজনৈতিক নক্ষত্রের প্রয়াণ

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সর্বজন শ্রদ্ধেয়, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) দুর্গাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি, মণি সিংহ মেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক, দশভুজাবাড়ী মন্দির কমিটির সভাপতি, প্রবীণ রাজনীতিবিদ দুর্গাপ্রসাদ তেওয়ারী(৯৪) পরলোক গমন করেছেন। তিনি বুধবার (৩১ জানুয়ারী) রাত ৮.৪০ মিনিটে নিজ বাসভবনে বার্ধক্য জনিত কারনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর অন্তোষ্টিক্রিয়া রোববার দুপুর ২.০০ ঘটিকার সময় স্থানীয় শ্মশানঘাটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি ২পুত্র, ১ মেয়ে, নাতি-নাতনি সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে স্থানীয় এমপি মোশতাক আহমেদ রুহী, সাবেক এমপি ছবি বিশ^াস, শেরপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা রেমন্ড আরেং, ডিএসকে‘র নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, পৌর মেয়র আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুস ছালাম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মুক্তিযোদ্ধাগন, উপজেলা চেয়ারম্যান (ভার:) পারভিন আক্তার, উপজেলা আ‘লীগের সভাপতি ওসমান গণি তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, জেলা বিএনপি‘র সাবেক সহ:সভাপতি ঈমাম হাসান আবুচাঁন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি‘র পরিচালক গীতিকার সুজন হাজং, অধ্যক্ষ ফারুক আহমেদ তালুকদার, দুর্গাপুর প্রেসক্লাব, মণিসিংহ মেলা উদযাপন পরিষদ, কমরেড মণি সিংহ ট্রাষ্টিবোর্ড, উপজেলা ক্ষেতমজুর সমিতি, সিপিবি ও তার অঙ্গসংগঠন, দুর্গাপুর বনিক সমিতি, উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ, উদীচী উপজেলা সংসদ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য: বৃহ:স্পতিবার সকাল ১১টায় টংঙ্ক স্মৃতিস্তম্ভে ওনার মরদেহ রাখা হয়। পরবর্তি স্থানীয় শহীদ মিনার ও দশভূজাবাড়ী মন্দিরে ঘন্টাব্যাপি সর্বস্তরের মানুষ, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো পুষ্পস্তবক অর্পন করে শেষ শ্রদ্ধা জানান। দুর্গাপ্রসাদ তেওয়ারী ১৯৩১ সালের ২০ আগস্ট নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরশহরের ‘দেশওয়ালীপাড়া’ গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। মহারাজা কুমুদচন্দ্র মেমোরিয়াল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫০ সনে ঢাকা বোর্ডের প্রথম ব্যাচের ছাত্র হিসেবে ম্যাট্রিক পাস করেন। কিশোর বয়সে যোগ দেন ছাত্র কংগ্রেসে। তখন কংগ্রেসের কার্যালয় ছিল নিজ বাড়িতেই। পার্টি কার্যালয়ের জন্য কংগ্রেস রাজনীতিবিদ বাবা শারদা প্রসাদ তেওয়ারী জমি দান করেছিলেন। তাই ছোট বেলা থেকেই রাজনৈতিক বলয়ের মধ্যেই বেড়ে ওঠেন তিনি। ম্যাট্রিক পাসের পর কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হলেও এক সময় বাবার অসুস্থতার কারণে বাড়ি ফিরতে হয় তাকে। সেইথেকে সময়ের প্রেক্ষাপটে স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নিজেকে যুক্ত করেন তিনি। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামী, টংক আন্দোলনের মহানায়ক, মুক্তিযুদ্ধাকালীন প্রবাসী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা, কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের মুক্তি সংগ্রামের নেতা মণি সিংহের রাজনৈতিক সহচর ছিলেন তিনি। ১৯৪৩-৪৪ সালের দিকে মণি সিংহের নেতৃত্বে শুরু হওয়া টংক প্রথাবিরোধী আন্দোলনে তিনি অগ্রসেনানীদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম। প্রজাদের ওপর দুর্গাপুরের রাজাদের শোষণ আর অত্যাচার তাকে আন্দোলন করতে উৎসাহ যুগিয়েছিল। তাই জমিদারি প্রথার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছিলেন তৎকালীন যুবক দুর্গাপ্রসাদ তেওয়ারী। টংক আন্দোলনের প্রত্যক্ষ সাক্ষী ও মিছিলে যোগদানকারীদের মধ্যে একমাত্র বেঁচে ছিলেন দুর্গাপ্রসাদ তেওয়ারী। আজ তারও অবসান ঘটলো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com