পাকিস্তান জাতীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন আলোচিত প্রার্থী হেরে গেছেন। এদের মধ্যে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও। তিনি একটি আসনে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার দেশটির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আজ চলছে ওই নির্বাচনের ফল প্রকাশ। উর্দু সংবাদমাধ্যম ডেইলি জংগ নওয়াজ শরিফ ছাড়াও আরো কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীর পরাজয়ের কথা নিশ্চিত করেছে।
বাকি পরাজিত প্রার্থীরা হলেন- ‘জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম-এফ’র (জেইউআই) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান, পাকিস্তান মুসলিম লিগ নেতা সাদ রফিক, আইপিপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর তারিন, পিটিআই নেতা পারভেজ এলাহী ও পিটিআই সংসদ সদস্য পারভেজ খট্টক। একইসাথে জামায়াতে ইসলামীর আমির সিরাজুল হক, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির আমিল ওয়ালি খান, এএনপি আমির হায়দার হোতি, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কেপি মেহমুদ খান ও শাহ মেহমুদ কোরেশির মেয়ে মেহরাবানো কুরেশিও নিজেদের আসনে জয় লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এই তালিকায় আরো রয়েছেন- পিটিআই নেতা আলিয়া হামজা মালিক, পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন) নেতা জাভেদ লতিফ, সাবেক ফেডারেল মন্ত্রী গুলাম আহমেদ বিলোর প্রমুখ। সূত্র : ডেইলি জংগ
স্বতন্ত্ররা এগিয়ে চলেছে: পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত ঘোষিত ১২৯টি আসনের মধ্যে স্বতন্ত্ররা পেয়েছেন ৫৮টি আসন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ (পিএমএল-এন)। তারা পেয়েছে ৩৪টি আসন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। তারা পেয়েছে ৩১টি আসন। বাকি আসনগুলো পেয়েছে অন্যান্য দল। এছাড়া জামিয়ত উলেমা-ই-পাকিস্তান ২টি আসন পেয়েছে। একটি করে পেয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ, বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি (মেঙ্গেল), মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম), আওয়ামি ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি)।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারেনি। তারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত জয়ী স্বতন্ত্রদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই হচ্ছে পিটিআইয়ের সমর্থিত প্রার্থীরা। কারাদ-ে দ-িত হওয়ায় ইমরান খানও নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। পাকিস্তানে সরকার গঠন করার জন্য অন্তত ১৩৩টি আসনের প্রয়োজন। ৩৩৬ আসনবিশিষ্ট পাকিস্তান পার্লামেন্টে গতকাল ২৬৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। বাকি ৭০ আসন সংরক্ষিত। এছাড়া চারটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনও গতকাল হয়েছে। এদিকে বিশাল জয় পেয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের সুপ্রিমো এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। জাতীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে একটি আসনে শোচনীয়ভাবে হারলেও অপরটিতে বিপুলভাবে জয়ী হয়েছেন।
আজ শুক্রবার ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, নওয়াজ শরিফ এনএ ১৩০ আসনে বিপুলভাবে জয়ী হয়েছেন। তিনি ১,৭১,০২৪ ভোট পেয়ে জিতেছেন। এই আসনে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. ইয়াসমিন রশিদ পরাজিত হয়েছেন ১,১৫,০৪৩ ভোট পেয়ে। এদিকে নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজও জয়ী হয়েছেন। তিনি এনএ ১১৯ আসন থেকে ৮৩,৮৫৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
পাকিস্তানে সরকার গঠন করার জন্য অন্তত ১৩৩টি আসনের প্রয়োজন। ৩৩৬ আসনবিশিষ্ট পাকিস্তান পার্লামেন্টে গতকাল ২৬৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। বাকি ৭০ আসন সংরক্ষিত। এছাড়া চারটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনও গতকাল হয়েছে।
নওয়াজ শরিফ হেরে গেছেন একটি আসনে: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ শরিফ জাতীয় পরিষদে মানসেরা আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে শোচনীয়ভাবে হেরে গেছেন। তিনি অবশ্য দুটি আসন থেকে নির্বাচনে লড়ছেন। অপর আসনে তিনি জয়ী হন। জাতীয় পরিষদের ১৫ নম্বর আসনের বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, শাহজাদা ৭৪,৭১৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর নওয়াজ পেয়েছেন ৬৩,০৫৪ ভোট।
শাহবাজ শরিফ জিতেছেন: পিএমএল-এন সভাপতি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ফেডারেল এবং প্রাদেশিক উভয় আসনেই জয়ী হয়েছেন। বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, তিনি লাহোরের এনএ-১২৩ আসন থেকে ৬৩,৯৫৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছনে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন ৪৮,৪৮৬ ভোট।
একইভাবে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে তিনি ৩৮,৬৪২ ভোটে জয়ী হয়েছেন। এখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী চৌধুরী ইউসুফ আলী পেয়েছেন ২৩,৮৪৭ ভোট।
হামজা শাহবাজও জয়ী হয়েছেন: শাহবাজ শরিফের ছেলে হামজা শাহবাজও জয়ী হয়েছেন। পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হামজা ১,০৫,৯৬০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলিয়া হামজা পেয়েছেন ১,০০,৮০৩ ভোট।