অবশেষে খুলে দেয়া হলো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ও আফ্রিকার সর্ববৃহৎ মসজিদ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর গত সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদটি উদ্বোধন করেন আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদুল মাজিদ তেবোউন।
সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় ইসলামের সবচেয়ে সম্মানিত দুই মসজিদের পরই এটি বিশ্বের বৃহত্তম মসজিদ। রাজধানী আলজিয়ার্সে অবস্থিত মসজিদটি ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে নির্মাণ করা হয়েছে।
মসজিদটি স্থানীয়ভাবে জামে আল-জাজায়ের বা দ্য গ্রেট মস্ক অব আলজিয়ার্স নামে পরিচিত। দুই লাখ বর্গমিটার আয়তনের এই মসজিদে একসাথে এক লাখ ২০ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। মসজিদে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনার, যা ২৬৫ মিটার (৮৬৯ ফিট) উঁচু। এখানে রয়েছে হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং প্যাড, ১৬ হাজার বর্গমিটারের দুটি কনফারেন্স হল এবং দুই হাজার আসনের পাঠাগার, যেখানে ১০ লাখ বই রাখা যাবে। তাছাড়া মসজিদের নিচে এক লাখ ৮০ হাজার বর্গমিটারের তিনতলা গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান রয়েছে।
মূলত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি শুধু আনুষ্ঠানিকতা ছিল। কারণ মসজিদটি প্রায় পাঁচ বছর ধরে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। তাছাড়া ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে এখানে নামাজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে ওই সময় প্রেসিডেন্ট তেবিউন করোনায় আক্রান্ত থাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। এরপর দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতার চার বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে তা চালু হলো।
২৭.৭৫ হেক্টর বিস্তৃত সুবিশাল মসজিদটি নির্মাণে ৮৯৮ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। ২০১২ সালে একটি চীনা সংস্থা এটির নির্মাণকাজ শুরু করে এবং ২০১৯ সালে কাজ প্রায় শেষ হয়েছিল। তবে নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি ও ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এর নির্মাণ হওয়ায় অনেক সমালোচনা হয়েছিল। মসজিদটি মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল আজিজ বুতেফ্লিকার একটি প্রকল্প ছিল। তিনি আফ্রিকার বৃহত্তম সর্ববৃহৎ মসজিদ হিসেবে তা চালু করতে চেয়েছিলেন এবং মরক্কোর কাসাব্লাংকার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মতোই এর নাম দিয়েছিলেন ‘আব্দেলাজিজ বুতেফ্লিকা মসজিদ’। তবে ২০১৯ সালের আলজেরিয়ায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে প্রেসিডেন্ট বুতেফ্লিকা দীর্ঘ ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগ করেন। পরে ২০১৯ সালের নির্ধারিত সময়ে মসজিদটির উদ্বোধন হয়নি এবং এর নামকরণেও পরিবর্তন ঘটে। সূত্র : আলজাজিরা ও স্কাই নিউজ