ঢাকার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর খন্দকার পাড়ার একই পরিবারের ইতালিযাত্রী পাঁচজনকে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (১ মার্চ) বাদ আসর নামাজে জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি পাঁচটি কবরে দাফন করা হয়।
অগ্নিকাণ্ডে নিহত একই পরিবারের পাঁচজন হলেন খন্দকার পাড়ার মরহুম কাসেম মিয়ার ছেলে ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক (৫১), তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম (৩৮), কলেজছাত্রী মেয়ে সৈয়দা কাসফিয়া ও স্কুলছাত্রী অপর মেয়ে সৈয়দা নুর এবং সাত বছরের ছেলে সন্তান সৈয়দ আব্দুল্লাহ।
নিহত মোবারকের চাচাত ভাই সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঢাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন মোবারক। কিছু দিন আগে ইতালি থেকে ছুটিতে দেশে এলেন তিনি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘটনার কিছুক্ষণ আগে তিনি বেইলি রোডের ওই রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন। শীঘ্রই পুরো পরিবারকে সাথে নিয়ে ইতালি যাওয়ার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা থাকলেও পরিবারের সকলকে সাথে নিয়ে আর ইতালি যাওয়া হল না মোবারকের। পরিবার নিয়ে একইসাথে রেস্টুরেন্টে খাওয়াও হল না তাদের।
সরজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গতকাল শুক্রবার (১ মার্চ) বাদ আসর গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি পাঁচটি কবরে দাফন করা হয়েছে নিহত মোবারকসহ পরিবারের পাঁচজনকে। এর আগে বিকাল ৩টায় পাঁচজনের লাশ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আনা হলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন নিহতদের লাশ এক নজর দেখতে তাদের গ্রামের বাড়িতে ভীড় জমায়। এ সময় শোকাহত অনেকেই কান্নায় পরিবারের সকলকে হারিয়ে নিঃসঙ্গ হয়ে যাওয়া মোবারকের বৃদ্ধ মা শুধুই কান্না করছিলেন। স্বজনহারা এই মায়ের কান্নায় যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠছিল। বাদ আসর স্থানীয় জামে মসজিদের কাছে খোলা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর খন্দকার পাড়ার একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চৌধুরী বাদল বলেন, ‘খুবই ভালো মানুষ ছিলেন মোবারক। এমন একটি পরিবারের সকল সদস্যের আকস্মিক নির্মম মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না আমরা। শোকে কাতর হয়ে পড়েছে গোটা ইউনিয়ন। শোকাহত হয়ে পড়েছে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ।’