রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসে। এছাড়া কোথাও কেটে গেলে তা সারতে চায় না। পানি পান করলেও সহজে পিপাসা মেটে না। তাছাড়া ক্লান্তি তো আছেই। তবে চিকিৎসকদের মতে, রক্তে শর্করা বাড়তে থাকলে আরও এমন কিছু সমস্যা দেখা দেয় যা সাধারণত ডায়াবেটিস বলে মনে হয় না। সেগুলো সম্পর্কেও জেনে রাখা জরুরি- রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে কী ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়?
পিরিয়োডন্টিটিস: সাধারণ দাঁতের রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে ডায়াবেটিস থাকলে। যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় পিরিয়োডন্টিটিস। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের দাঁত কিংবা মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলেই সতর্ক হতে হবে।
ত্বকের সমস্যা: রক্তে শর্করা বেশি হওয়ার প্রথম লক্ষণ ফুটে ওঠে ত্বকে। তেমন কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের ভাঁজে ভাঁজে বিশেষ করে ঘাড়, গলা, কাঁধ, বাহুমূল, হাঁটু, কনুইয়ে কালচে ছোপ পড়তে দেখলেই সাবধান হতে হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ কমে গেলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ঘন ঘন সংক্রমণ: ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমশ দুর্বল করে দেয়। ফলে চট করে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। শুধু তা ই নয়, চুলের গোড়ায় সংক্রমণ বা ফলিকিউলাইটিস, নখের কোণে পুঁজ জমে সংক্রমণ হওয়ার পিছনেও কিন্তু ডায়াবেটিসের হাত আছে।
চোখে সমস্যা: রক্তে শর্করা বেশি থাকলে চোখের মধ্যে থাকা রক্তবাহিকাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে কম বয়সেই দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসতে পারে। পাকাপাকিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে রেটিনা। দূরের জিনিস দেখতে বা বই পড়তেও সমস্যা হয়।
শ্রবণজনিত সমস্যা:ডায়াবেটিস থাকলে শ্রবণযন্ত্রের উপরেও তার প্রভাব পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস থাকলে চোখের মতোই কানের রক্তবাহিকা ও স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই কানে কম শুনলেও রক্তের শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
মুখে দুর্গন্ধ: ডায়াবেটিকদের মধ্যে ‘কেটোঅ্যাসিডোসিস’ খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। শরীরে ইনসুলিন হরমোনের অভাব হলে কিটোন নামক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে মুখে ফলের গন্ধ তৈরি হয়।
ওজন ও খাবারে পরিবর্তন: রক্তে শর্করা বাড়তে থাকলে ওজনে পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ডায়াবেটিস হলে ভাজাপোড়া খাবারের প্রবণতা বেড়ে যায়। তবে ডায়াবেটিস হলে সবারই যে ওজন বেড়ে যাবে, তেমনটি নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে এর উল্টোটিও হতে পারে। তাই হঠাৎ ওজনে হেরফের হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া