গতকাল মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে হুইল চেয়ারে করে উপস্থিত হন গুলশান থানার নাশকতার মামলায় ২১ মাসের সাজা পাওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক এমপি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম। এরপর আপিলের শর্তে আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত হওয়া মামলাটির সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর পুলিশের কাজে বাধা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং মেজর (অব.) মো. হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ তিনজনকে ২১ মাসের কারাদ- দেন আদালত।
গত ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩, হাঁটুতে অস্ত্রোপচার চিকিৎসার জন্য দুপুর আড়াইটায় এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে ভারতের উদ্দেশ্যে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ত্যাগ করেন মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ভারতে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় গত ২৮ ডিসেম্বর আদালত তাকে দঃ বিঃ ১৪৩ ও ৪৩৫ ধারায় মোট ২১ মাসের কারাদ- ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের কারাদ- দেন আদালত। পরে গত ৩ মার্চ, ২০২৪ ভারতে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরে মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন হাফিজ। তবে এ মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করে জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী।
মামলার অন্য আসামি এমএ আউয়াল খান, মো. রাসেল, মঈনুল ইসলাম, মো. বাবুল হোসেন ওরফে বাবু ও মো. আলমগীর হোসেন ওরফে রাজুকে দঃ বিঃ ১৪৩ ও ৪৩৫ ধারায় মোট তিন বছর ৬ মাস কারাদ- ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের কারাদ-ের আদেশ দেন আদালত। এছাড়া মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিটভুক্ত অপর ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর এমএ কাউয়ুম, মো. দুলাল, তোফায়েল আহম্মেদ ওরফে লিটন, মো. জাহাঙ্গীর শিকদার ওরফে বাবু, আরিফুল ইসলাম, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সামসুল হক মিয়াজী, মো. বিপ্লব, মো. খুরশিদ আলম মমতাজ, মো. মোশারফ হোসেন ও মো. মাহাবুব। গত ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামিরা ৪ জুন, ২০১১ গুলশান থানাধীন মহাখালী ওয়ারলেস গেট পানির ট্যাংকির সামনে রাস্তার ওপর অবৈধ সমাবেশ থেকে পুলিশের কাজে বাধা দেন এবং তাদের আক্রমণ করেন ও রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেন। ২৯ এপ্রিল, ২০১৪ মামলাটি তদন্তের পর গুলশান থানার এসআই কামরুল হাসান তালুকদার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২৫ এপ্রিল, ২০২২ এ মামালায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চালাকালীন সময়ে আদালত ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন।