প্রতিবেশী দেশের সমর্থনে যুদ্ধ করে ভারতীয় সেনারা শহীদ হয়েছেন। সত্যিকারের প্রয়োজনে তারা আমাদের পাশে ছিল। ভারত না থাকলে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যরকম হতে পারতো। ভারতীয় সেনাদের সার্বিক এ সহযোগিতা এবং তাদের আত্মত্যাগকে আমরা স্যালুট জানাই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ভারত আমাদের অস্ত্র সহায়তা
দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেইনিং করিয়েছে, অর্থ সহায়তা দিয়েছে ও এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার জন্য ভারতের হাজারো সেনা মারা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের ৫২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে কত মানুষ মারা গেছে এটা নিয়ে অনেকে সন্দেহ করে। অনেক কথাবার্তা বলে থাকে।
কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তারা জানে কত মানুষ মরেছে। আমার পাশে থেকে যে যুদ্ধ করেছে সে শাহাদাত বরণ করেছে। তাছাড়া আমার সাথে যুদ্ধ করা অনেকেই শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ভারতের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের স্বাধীনতা অর্জন এত সহজ ছিল না। ডিসেম্বরে ভারতীয় সৈন্যরা ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ শুরু করে। এর আগে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা শুধু গেরিলা যুদ্ধ করেছে। তাদের সাথে যৌথ হামলায় আমরা বিশ্বের অন্যতম সেরা সেনাবাহিনীকে (পাকিস্তানি বাহিনী) পরাস্ত করেছি। তাদের হাজারের বেশি সৈন্য মারা গেছে। আমরা তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক আগেও অটুট ছিল সামনেও অটুট থাকবে বলে আমি মনে করি।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, সেনা সদর দপ্তরের কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লে. জেনারেল মো. মজিবুর রহমান ও ঢাবি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির (বীর প্রতীক, পদ্মশ্রী) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন।