রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন

অর্থের অভাবে মোকারামের চিকিৎসা বন্ধ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০২৪

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের সবুজপাড়া গ্রামের দিনমজুর কোরবান আলী ছেলে মোকারাম(২৩)। তার শরীরে বাসায় বেঁধে আছে লিপোড প্রোটিনোসিস নামের এক বিরল রোগ। টানা এক যুগের বেশি সময় ধরে শরীরে বাসা বাঁধা লিপোড প্রোটিনোসিস রোগ নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছেন মোকারাম।তৃতীয় শ্রেনিতে পড়ার সময় মোকারামের শরীরে এ রোগ ধরা পড়ে। যে বয়সে বন্ধু বান্ধবের সাথে স্কুলে কিংবা খেলার মাঠে থাকার কথা সে বয়সে বিরল এ রোগে কাতরাচ্ছেন তিনি।ইচ্ছে করলেও হাটতে পারে না বসতে পারে না। পুরো শরীর ঢেকে গেছে এ রোগে। অসহ্য ব্যাথা নিয়ে কষ্ট আছেন এ কিশোর।ছেলেকে সুস্থ করতে শেষ সম্বল বিক্রি করেও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে নাই মোকারামের বাবা কোরবান আলী। এমন অবস্থায় বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন দিনমজুর বাবা কোরবান আলী। জানা গেছে, জন্মের পর থেকে মোকারাম সুস্থ ও সবল ছিল।নিয়মিত পড়াশোনা ও বন্ধু বান্ধবের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটতো। হটাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন মোকারাম।সারা শরীরে ব্যাথা অনুভুত হলে মোকারামের বাবা ছেলেকে নিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হন।দীর্ঘদিন ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়ে কাজ না হলে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হন তারা।ততদিনে মোকারামে সর্ব শরীর ঢেকে গেছে লিপোড প্রোটিনোসিস নামের এই বিরল রোগে।এরই মধ্যে মোকারামের মা মারা যায়।ঢাকা পিজি হাসপাতালে ৪ মাস চিকিৎসা নিয়ে অর্থের অভাবে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন পরিবারটি। চিকিৎসকরা বলছেন, বিরল এ রোগটি উন্নত চিকিৎসা করালে হয়তো সুস্থ হতে পারবে। তবে এই রোগের চিকিৎসা খরচ খুবই ব্যয় বহুল হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছে পরিবারটি। মোকারাম বলেন, সারাদিন বিছানায় শুয়ে দিনকাটে। ইচ্ছে করলেও হাটতে পারি না, খেলতে পারি না।খুব কষ্ট হয়।খাবারের রুচি দিনদিন কমে যাচ্ছে। আমি সুস্থ হতে চাই।
মোকরামের বাবা কোরবান আলী বলেন, আমার ছেলে মোকরাম ছোট্ট থেকেই এ রোগে আক্রান্ত হন। অনেক চিকিৎসা করেও সুস্থ করতে পারিনি। আমার ছেলে অনেক মেধাবী লেখাপড়ার খুবই ইচ্ছে কিন্তু তার শরীরের এমন করুণ অবস্থা। বিছানা থেকে উঠতে পারে না।ঠিকমত হাটতে পারে না।দিন দিন শরীর শুকিয়ে কাঁঠ হয়ে যাচ্ছে। টাকার অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে না পারা কতটা কষ্টের তা ভাষায় বোঝাতে পারবো না। তিনি আরো বলেন, সরকার ও দানশীলদের কাছে আমার জোড় দাবি আমার ছেলের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিলে খুবই ভালো হতো। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন,মোকারাম ৬ বৎসর বয়সে হতে এ রোগে ভুগছেন। অনেক চিকিৎসার পরেও সুস্থ হয়ে উঠেনি। এদিকে তার চিকিৎসার পিছনেই জমিজমা বিক্রি করে সর্বশান্ত হয়ে গেছে অসহায় পরিবারটি। যদি উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত তাহলে সুন্দর জীবন ফিরে পেত মোকরাম মিয়া। কুড়িগ্রাম জেলার সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আমিনুল ইসলাম বলেন, এই রোগটি অত্যন্ত বিরল একটি রোগ। জন্মের ৬ বৎসর বয়সে এই রোগীর দেহে দেখা দিয়েছে।লিপোড প্রোটিনোসিস রোগের কারনে রোগীর সর্ব শরীর কুচিয়ে জীর্ন শীর্ন হয়ে যায়।এ্যডরিন্যাল ইনসাফিশিয়েন্ট কারনে এটি মানুষের শরীর আক্রান্ত হয়।তবে এটি একটি ব্যয় বহুল চিকিৎসা। উন্নত চিকিৎসা করালে মোকারাম হয়তো সুস্থ হতে পারবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com