প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীকে টেশিভিশন কিংবা অন্যান্য গানের অনুষ্ঠানে খুব একটা দেখা যায় না। তবে ভক্ত-অনুরাগীরা তার কণ্ঠের গান মিস করছেন। শুদ্ধ সংগীতের এ শিল্পী ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী ভালো নেই। তিনি বলেন, ‘শরীরটা ভালো যাাচ্ছে না। বেশ কিছুদন ধরে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত। সেই সঙ্গে হাঁপনিতেও ভুগছি।’ ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী ১৯৫২ সালের ২৫ অক্টোবর নরসিংদীর শিবপুর থানার খৈনকুট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
পারিবারিক জীবনে ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী দুই সন্তানের জনক। ছেলে ফাইয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী ও মেয়ে মেহনাজ চৌধুরী বারখা। পেশাদার শিল্পী না হলেও ছেলে-মেয়ে দুজনেই দারুণ গান করেন, বাবার মতোই শুদ্ধ সংগীতকে লালন করেন। ছেলে ফাইয়াজ বাবার সাথে কয়েকটি টিভি অনুষ্ঠানে মিউজিশিয়ান হিসেবে বাজিয়েছেন বিভিন্ন সময়। মেয়ে অবশ্য দেশের বাইরে থাকেন। তার স্ত্রী সাবরা নিয়াজও সংগীত পরিবারের সন্তান। শ্বশুর সৈয়দ জাকির হোসেনও ছিলেন উপমহাদেশের একজন খ্যাতিমান সুরস্রষ্টা ও উচ্চাঙ্গ সংগীতের গুরু। নিভৃতচারী সুরসাধক নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী প্রথম টেলিভিশনে আসেন ১৯৮৫ সালে, বিটিভিতে ‘আমার যত গান’ নামক অনুষ্ঠানে। আবু হেনা মোস্তফা কামাল ছিলেন এর উপস্থাপক। যদিও এর আগেই তিনি বিদেশে গাইতে শুরু করেছিলেন। ১৯৭৯ সালে প্রথমবার মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে গাইতে যান। এরপর একে একে বিভিন্ন দেশে গিয়ে নিজের কণ্ঠ আর সুরের মূর্ছনায় শ্রোতাদের সামনে দেশের, বাংলা গানের প্রতিনিধিত্ব করতে থাকেন। ক্রমশ দেশ-বিদেশের শ্রোতাদের মুগ্ধ করে উপমহাদেশের অন্যতম ধ্রুপদী শিল্পীতে পরিণত হন তিনি। ভারতীয় শাস্ত্রীয় ও রাগ সংগীতের ওপর দুর্দান্ত দখল থাকা এ সাধক শিল্পী ঠুমরি, খেয়াল, গজলসহ সকল ঘরানাতেই নিজেকে মেলে ধরেছেন দারুণভাবে। ‘তোমার যাবার সময়’, ‘সুখ আমার সুখতারা’, ‘কিছু লোক পিছু কথা বলবেই’, ‘রাঙা মাটির রঙে’, ‘একফোঁটা বৃষ্টি’, ‘তোমার কালো দুটি চোখ’, ‘এক তাজমহল’, ‘আজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে’, ‘জীবনানন্দ হয়ে’ প্রভৃতি শ্রোতানন্দিত গানের শিল্পী ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ। ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী প্রথম প্লেব্যাক করেন এহতেশামুর রহমান পরিচালিত ‘গীত কাহি সংগীত কাহি’ সিনেমাতে। এরপর তিনি ‘নতুন বউ’, ‘দিওয়ানা’, ‘দেনা পাওনা’, ‘চকোরী’ ও ‘মিস সুন্দরী বাংলাদেশ’ সিনেমাতে প্লেব্যাক করেন।