চরম অস্থির এই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না কোনোভাবেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে বিনা লাভে পণ্য বিক্রি শুরু করেছেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মুদি ব্যবসায়ী মোঃ ওমর ফারুক খাঁন। লাগামহীন এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে পবিত্র রমজান উপলক্ষে সবার কাছে উদাহরণ হওয়ার মতো এক কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন তিনি। পুরো রমজান মাস জুড়ে বিনা লাভে পণ্য বিক্রয় করবেন এই ব্যবসায়ী। সরজমিনে মোঃ ওমর ফারুক খাঁনের ‘আব্দুল্লাহ ভ্যারাইটিজ স্টোর’ এ গিয়ে দেখা যায়, তার দোকানে ১২ রকমের পণ্য বিনালাভে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তিনি প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি করছেন ১০১ টাকায়, খেসারি ডাল ১১৬ টাকায়, চিড়া ৫৫ টাকায়, চিনি ১৩৬ টাকায়, বেসন ৮৬ টাকায়, মুড়ি ৭০ টাকায়, লাচ্ছা সেমাই ১৩৫ টাকায়, সলা সেমাই ৬৫ টাকায়, স্টার শিব দুধ ৯৫ টাকায়, মিঠাই ১১১ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। পাশাপাশি সোয়াবিন তেল ও খেজুরও লাভ ছাড়াই বিক্রি করছেন ওমর ফারুক। ক্রেতাদের সুবিধার্থে স্টোরে পণ্যের মূল্য তালিকাও সাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। ব্যবসায়ী ওমর ফারুক খবরপত্রকে জানান, রমজান আসতলেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা। অথচ রমজানে এলে মধ্যপ্রাচ্যে সব খাবারের দাম কমিয়ে দেওয়া হয়। তাদের এমন উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে রমজান উপলক্ষে বিনা লাভে পণ্য বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য আগামী রমজানেও এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান এ ব্যবসায়ী। বিনা লাভে রমজানের পণ্য বিক্রি করার বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে। ইতিমধ্যেই পেয়েছেন ব্যাপক সারা। দূর দূরান্ত থেকেও এখানে পণ্য কিনতে এসে মধ্যবিত্ত ও অসহায়রা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্যান্য বড় ব্যবসায়ীদেরও এভাবে এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করছেন সবাই। পণ্য কিনতে আসা স্কুল শিক্ষক সুব্রত খবরপত্রকে বলেন, যেখানে ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সিন্ডিকেট করে সব পণ্যের দাম বাড়াতে সেখানে ব্যতিক্রম ওমর ফারুক ভাই। তিনি কম দামে চিনি, তেল খেজুরসহ বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করায় আমরা কিনতে পারছি। তাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না। অটোভ্যান চালক জলিল মাদবর খবরপত্রকে বলেন, আমরা গরিব মানুষ। জিনিসপত্রের যে দাম মন চাইলেও সব কিনতে পারি না। এ দোকানে এসে খুবই ভাল লাগছে।কম দামে কিছু কিনতে পারলাম। সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইকবাল খাঁন খবরপত্রকে বলেন, মাহে রমজান মাস সিয়াম সাধনার মাস। আরব বিশ্বে সকল পণ্যের দাম কমিয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা। আর আমাদের দেশে এ মাস হয়ে উঠে ব্যবসায়ীদের আনন্দের মাস। ইচ্ছেমতো প্রত্যেকটা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন সিন্ডিকেট করে। সে জায়গায় ওমর ফারুক বিদেশের মতো রোযাদারদের জন্য পণ্যের দাম কমিয়ে বিক্রয় করছে এটা অন্যরকম একটা ভালো কাজ। শরীয়তপুর ভোক্তা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সুজন কাজী খবরপত্রকে বলেন, ওমর ফারুক রমজান মাসে কম মূল্যে মানুষের জন্য নিত্যপণ্য বিক্রির যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি প্রশংসার দাবি রাখে। আমারা তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।