বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে ষড়যন্ত্র চলছে। শুধু তাই নয়, জিয়াউর রহমানের বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এটার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরে তা প্রচার করতে হবে। তার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সম্বলিত পুস্তক নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। গতকাল রোববার রাজধানীর লেডিসক্লাবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশে উন্নয়নের গান গায় সরকার। এই উন্নয়ন তো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন। তিনি তো স্বল্প সময়ে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সাথে লড়ছেন। তার জন্য দোয়া করবেন তিনি যেন সুস্থ হয়ে উঠেন। একইসাথে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনায় দোয়া চাইছি। অনুষ্ঠানে জেডআরএফ‘র প্রেসিডেন্ট ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন।’ জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক ডা: ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- ইফতার মাহফিল উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। জেডআরএফের ইফতার মাহফিল উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার মীর হেলালের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. সদরুল আমিন, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুন আল রশিদ প্রমুখ।
বিশিষ্টজন ও পেশাজীবীদের মধ্যে ইফতারে উপস্থিত ছিলেন- এএসএম আবদুল হালিম, কবি আবদুল হাই শিকদার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, শামসুর রহমান, শিমুল বিশ্বাস, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, শহীদুল ইসলাম বাবুল, ডা: পারভেজ রেজা কাকন, হেলেন জেরিন খান, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, নাছির উদ্দিন নাছির, প্রকৌশলী মো: মোস্তাফা-ই জামান সেলিম, মাহবুব আলম, একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল, ডা: সিরাজ উদ্দীন, ডা: মো: আবদুস সালাম, ডা: রফিকুস সালেহীন, ডা: জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা: মো: মেহেদী হাসান, ডা: এএস হায়দার পারভেজ, ডা: সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী, ডা: মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা: মাসুদ আক্তার জীতু, ডা: শাহ মুহাম্মদ আমানউল্লাহ, ডা: মো: আনোয়ারুল হক, ডা: সাজিদ ইমতিয়াজ, ডা: রাকিবুল ইসলাম আকাশ, ডা: তানজিম রুবাইয়্যাত আফিফ, ব্যারিস্টার সৈয়দ ইজাজ কবির, আশরাফ জালাল মনন, অধ্যাপক ড. মো: আবদুর রশিদ, ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ড. আল মোজাদ্দেদী আলফেসানী, অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম, ড. শেখ মনির উদ্দিন, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শফিউল আলম দিদার, সাংবাদিক নেতা কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিশিষ্ট সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ইলিয়াস খান, ডিইউজের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সেক্রেটারী মো: খুরশিদ আলম, সাংবাদিক নেতা আমিরুল ইসলাম কাগজী, সরদার ফরিদ, মুরসালিন নোমানী, ইলিয়াস হোসেন, শারমিন রিনভী, গোলাম সামদানী।
অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদেরকে শক্তিশালী হতে হবে। আরো তীব্রতর আন্দোলন করতে হবে যতদিন পর্যন্ত না লক্ষ্য আদায় হয়। খালেদা জিয়া সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। সেবা পাওয়ার মৌলিক অধিকার থেকে তিনি বঞ্চিত। যিনি গণতন্ত্র রক্ষায় আজীবন লড়াই করছেন। তিনি বলেন, আমরা ভোট বর্জন করেছি। এবার ভারতীয় পণ্য বর্জন করতে হবে। আসুন ভারতের ‘নিকৃষ্টতম পণ্য’ আওয়ামী লীগকে বর্জন করি। রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ দেশ এখন ঘোর দুর্দিন অতিক্রম করছে। সত্যকে সত্য বলা যায় না। রাষ্ট্র যদি বলে এটা সত্য সেটা মানতে হবে। গণতন্ত্র ধ্বংস যারা করেন তাদেরকে বলা হয় গণতন্ত্র রক্ষার প্রতীক! একটি বেপরোয়া সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন হয়ে জনগণের ওপর ছরি ঘোরাচ্ছে। গণতন্ত্রের নিয়ম কানুন প্রথা রীতি সব ধ্বংস করা হয়েছে। কেউ যাতে কথা বলতে না পারে, প্রতিবাদ না করতে পারে সে ব্যাবস্থা কায়েম করেছে এ সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শেষ করা হয়েছে। এই সরকারের পতন ছাড়া কেউ স্বাভাবিকভাবে জীবন-যাপন করতে পারবেন না। আরেকবার বুক পেতে দাঁড়াতে হবে।
বিএনপির ৫১ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় উদ্বেগ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ৫১ নেতাকর্মীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার এই বিবৃতি দেন তিনি। ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা বিএনপির সদস্য মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জেলা যুবদল সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাজিউর রহমান সাগর ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পিসহ ৫১ জন নেতাকর্মীর জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণের ঘটনায়, এই বিবৃতি দেন ফখরুল। তিনি বলেন, ৭ই জানুয়ারির আওয়ামী ডামি সরকার নব্য বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর অবর্ণনীয় জুলুম-অত্যাচার অব্যাহত রেখেছে। সেটিরই ধারাবাহিকতায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুসহ ৫১ জন নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর ও তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হলো। মির্জা ফখরুল বলেন, পবিত্র রমজান মাসে দেশের মানুষ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা তখন দখলদার আওয়ামী সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে নিত্য-নতুন মিথ্যা মামলায় আটকসহ আদালতকে দিয়ে জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারান্তরীণের অমানবিক খেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীনদের নির্মম আচরণ, দৌরাত্ম্য এবং দাপটে মানুষ এখন উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার তাদের সকল অপকর্মকে আড়াল করতেই সরকারী জুলুমের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে। তিনি আরও বলেন, অপরাধ না করেও মিথ্যা মামলায় আসামী হওয়া, গ্রেপ্তার হওয়া ও কারাগারে যাওয়া এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। আইনের শাসনহীন এই দেশে নিরপরাধ মানুষরাই সরকারী নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ৭ই জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের পর কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকার তাদের দুঃশাসন চালাতে আরও বেশী ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। তবে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে সংগ্রামী জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বিএনপি মহাসচিব অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এবং অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবুসহ ৫১ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান।