ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশন লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় সারা দেশে কত শতাংশ ভোট পড়েছে তার হিসাব প্রকাশ করেছে। গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম দফার ভোট ৬৬ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফার ভোট ৬৬ দশমিক ৭১ শতাংশ পড়েছে। হঠাৎ করেই ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ ভোট বেড়ে গেছে।
এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী গত বুধবার (১ মে) মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রাইহানের সামর্থনে ফারাক্কায় এক জনসভায় অংশ নেন। এদিনের সভামঞ্চ থেকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনার ও বিজেপির ওপর অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন আসলেই নানা রকম ভাঁওতা ও মিথ্যে কথা বলা হয়। প্রথম দফা ও দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হলো। নির্বাচন কমিশনের সূত্র ধরে সব সংবাদমাধ্যম লিখেছে কোথায় কত শতাংশ ভোট হয়েছে। আমি গত রাতে হঠাৎ শুনতে পেলাম বিজেপির যেখানে কম ভোট হয়েছে সেখানেই ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ ভোট হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন এই সংক্রান্ত একটি নোটিশও জারি করেছে।
তিনি আরও বলেন, নাগরিকদের সন্দেহ দূর করতে ইভিএম মেশিন কারা তৈরি করেছে। ইভিএম মেশিনের চিপ কারা তৈরি করেছে? এই সংখ্যাটা বাড়লো কি করে? প্রথম দফার নির্বাচনে কি ছিল এবং দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে কত ভোট পড়েছিল? কত ভোটার এবং কত মেশিন ব্যবহার হয়েছিল সেটা আমরা জানতে চাই। প্রায় ১৯ লাখ ইভিএম মেশিন অনেকদিন ধরেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বিজেপিশাসিত রাজ্য গুলো মানুষের ভোট পাল্টে দিয়ে নিজেরাই ভোট দিচ্ছে এটা আমার সন্দেহ। এই সন্দেহটা যেন মানুষের মধ্যে না হয়। সেজন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে আমরা বলব মানুষের সন্দেহ দূর করুন। বিজেপির কমিশন হয়ে বসে থেকে লাভ নেই। আপনাকে নিরপেক্ষ কমিশন হিসেবে দেখতে চায় ভারতের জনগণ। এরপর মুখ্যমন্ত্রী ইন্দো-বাংলা গ্যাস পাইপ লাইনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, আমি জানি আদানি কোম্পানিকে দিয়ে ইন্দো-বাংলাদেশ গ্যাস পাইপ লাইনের একটা কাজ করানো হচ্ছে। কিন্তু বাংলায় কোথাও সেই কাজটা হচ্ছে না। বাংলায় যদি না হয় অন্য রাজ্যে কিভাবে হয়, এত মিথ্যে কথা কিভাবে বলছেন? বিজেপির কাছে বাংলা দুয়োরাণী কারণ বাংলায় সংখ্যালঘু মানুষজন বেশি থাকে।
তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ একটি বড় রাজ্য। দিল্লিতে কিছু করতে গেলে যেটা দু’হাজার কোটি রুপিতে হয়ে যায় আর বাংলায় করতে গেলে সেটাতে লাগে প্রায় ৩০ হাজার কোটি রুপি। মুখ্যমন্ত্রী ফারাক্কার পানি চুক্তি নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, ফারাক্কায় যখন চুক্তি হলো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া, সিপিএম এবং বাংলাদেশের মধ্যে তখন কথা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার ৭০০ কোটি রুপি দেবে রাজ্যকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে। একটা পয়সাও দেয়নি। ফারাক্কা ব্যারেজের ড্রেজিংটা পর্যন্ত হয় না। ফলে পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এমনকি এই গ্রীষ্মের প্রচ- গরমে ঠিকভাবে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বারবার বলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এটা নিয়ে বড় আন্দোলন করা উচিত।