শেরপুরের নকলা উপজেলার ২ নং নকলা ইউনিয়নের দক্ষিণ নকলা এলাকার মৃত লাল মিয়ার ছেলে আল আমিন, আক্কাছ আলীর ছেলে ফিরোজ মিয়া, হাফিজুল ইসলাম ও মনির মিয়া; কব্দুল মিয়ার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম; ফাজিল মিয়ার ছেলে সাদিকুল ইসলামসহ তাদের পরিবার পরিজনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।
সম্প্রতি ধান মাড়াইকে কেন্দ্র করে আল আমিন গংরা দক্ষিণ নকলা এলাকার মৃত আবুল কাসেমের ছেলে কৃষক সাইফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামের স্ত্রী উম্মে হানী ও ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী উল্লাস ইসলামকে বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখে। পরে পথচারীরা তাদেরকে উদ্ধার করে নকলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী উম্মে হানীর অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাদেরকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে সাইফুল ইসলাম ও উম্মে হানী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং তাদের ছেলে উল্লাস ইসলাম ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎনাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি ২৯ এপ্রিল রাত ৮ টারদিকে ঘটে। ঘটনায় কৃষক সাইফুল ইসলামের মাথায় ১৪ টি ও তার স্ত্রী উম্মে হানীর মাথায় ১৩ টি সেলাই দিতে হয়েছে। হাত ভেঙ্গে গেছে ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী উল্লাস ইসলামের।
এবিষয়ে ২ মে বৃহস্পতিবার মৃত লাল মিয়ার ছেলে আল আমিন (২৫), আক্কাছ আলীর ছেলে ফিরোজ মিয়া (৪৫), হাফিজুল ইসলাম (৩৫) ও মনির মিয়া (৩০), কব্দুল মিয়ার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম (৪০) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩০), ফাজিল মিয়ার ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৩) সহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে অভিযুক্ত করে নকলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি মামলা করার এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত হলেও কোন অগ্রগতি নেই, নেই অপরাধীদের গ্রেফতার বা আটকের তথ্য। ফলে অপরআধীরা প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে ঘুরছে, দিচ্ছে ভুক্তভোগীদের নানান হুমকি। নিরাপত্তাহীনতায় আছেন ভূক্তভোগী পরিবারের লোকজন।এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় সুখন বলেন, আল আমিন গংদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তাদের স্বভাবটাই যেন নিরিহ মানুষের উপর অত্যাচার করা। তাদের বিরোদ্ধে ঝাউরি বিলের সরকারি ভূমি জবরদখলের তথ্য রয়েছে বলে তিনি জানান। তাদের সঙ্গবদ্ধ চক্রের অত্যাচারে এলাকার মানুষ সবসময় আতঙ্কের মধ্যদিয়ে দিনাতিপাত করেন বলে সুখন জানান। তিনি আরও জানান, সঙ্গবদ্ধ চক্রের ধীর্ঘদিনের অন্যায় অবিচারের সঠিক বিচার হয়না বলেই তারা আজ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিহারীরপাড় এলাকার আনডু মিয়া নামে এক নিরীহ কৃষককে খুন করার অপরাধে মামলা মোকদ্দমার তথ্য রয়েছে। অজ্ঞাত কারনে ওই খুনের মামলা থেকেও তারা রেহাই পাওয়ায় আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। তাদের অত্যাচার থেকে নিরিহ মানুষকে রক্ষা করতে আইনি প্রতিকার জরুরি। এসব ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোন সময় মারাত্মক অপরাধ সংঘঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রতিকার না হলে যেকোন সময় খুন খারাপির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন। এলাকায় আতঙ্কের গ্যাং নামে খ্যাত আল আমিন গংদের জরুরি গ্রেফতার করাসহ তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতাদের চিহৃত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান অগণিত ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসী। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হতে বিবাদীদের বাড়িতে গেলে ২ মুরুব্বি ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে আল আমিনসহ তাদের ৩/৪ জনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে বাড়িতে আসতেছি আসব বলে বলে কালক্ষেপন করেন, অবশেষে তারা সবাই তাদের মোবাইলের সুইচ বন্ধ করে রাখেন। এবিষয়ে নকলা থানার ওসি আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম চলমান আছে। আসামি গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা চলছে। অত্যাচারে অতিষ্ঠ জনগণের প্রশ্ন তাদের গ্রেফতার না করার কারণ কি? খুঁটির জোর কোথায়?