প্রযুক্তির এ যুগে অনলাইন প্রাইভেসি সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমনকি ইনস্টাগ্রামের মতো শীর্ষ সোশাল মিডিয়া অ্যাপও হ্যাকিং বা অনলাইন স্ক্যাম এড়ানোর বিষয়ে শতভাগ নিরাপত্তা দিতে পারে না। এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ইনস্টাগ্রামের কিছু প্রাইভেসি ফিচার সম্পর্কে।
টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন: অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ক অনেক বিশেষজ্ঞই ব্যবহারকারীর অ্যকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (২এফএ) চালু করার আহ্ববান জানান। নাম থেকেই বোঝা যায়, দুই দফা নিরাপত্তা স্তর পেরোতে হয় এই সেটিংয়ে। ফলে, কেউ পাসওয়ার্ড জেনে গেলেও, তাকে অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করার জন্য আরও একটি স্তর পার করতে হবে। হ্যাকিং থামানোর শতভাগ নিশ্চয়তা না দিলেও, ২এফএ সাধারণ অনলাইন আক্রমণ আটকে দিতে পারে। ২এফএ চালু করার জন্য প্রথমে অ্যাকাউন্টের সেটিংস অপশনে যান। এরপর এই অনুসারে অপশনগুলোতে প্রবেশ করুন: অ্যাকাউন্টস সেন্টার > পাসওয়ার্ড অ্যান্ড সিকিউরিটি > টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন। এ ফিচারে প্রমাণীকরণের জন্য ইনস্টাগ্রাম সরাসরি ব্যবহারকারীর ফোনে এসএমএম পাঠাতে পারে অথবা কোনো থার্ড পার্টি পরিষেবা ব্যবহার করতে পারে। সেখান থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী অপশনটি চালু করে নিন।
প্রোফাইল প্রাইভেট করুন: প্রোফাইল সেটিংস বদলে প্রাইভেট করে ফেলা সহজ একটি পদক্ষেপ। একটি অ্যাকাউন্ট কারা দেখছে, সেটিই নিয়ন্ত্রণ করা যায় এ সেটিংয়ের মাধ্যমে। এটি করলে কেবল অ্যাকাউন্ট যারা ফলো করছেন, তারা পোস্ট দেখতে, কমেন্ট বা লাইক করতে পারবেন। ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট প্রাইভেট করার জন্য, প্রথমে নিজের প্রোফাইলে প্রবেশ করুন। ওপরের ডান কোণা থেকে মেনু চালু করুন। এরপরে ‘সেটিংস অ্যান্ড অ্যাক্টিভিটি’ অপশনে যান ও ‘অ্যাকাউন্ট প্রাইভেসি’ নির্বাচন করুন। এরপরের পেইজ থেকেই অ্যাকাউন্ট প্রাইভেট করে নিতে পারবেন।
স্টোরি সেটিংস আপডেট করুন: অনেকেই আছেন যারা প্রচুর স্টোরি পোস্ট করে থাকেন। তবে, এমন কিছু স্টোরি আছে যেটি ব্যবহারকারী সবাইকে দেখাতে চান না। সে ক্ষেত্রে স্টোরি পোস্ট করার পেইজ থেকে ওপরের ডান কোণায় কগ আইকনে চাপ দিলে স্টোরি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রাইভেসি সেটিংস পাবেন।‘ক্লোজ ফ্রেন্ডস’ ফিচার, কেবল বাছাই করা নির্দিষ্ট কিছু বন্ধু বা ফলোয়ারকেই স্টোরি দেখাবে। এ ছাড়া, কেউ চাইলে এমন ফলোয়ারের একটি তালিকাও তৈরি করতে পারেন যারা স্টোরিটা দেখতে পাবেন না। ‘হাইড স্টোরিজ ফ্রম’ অপশনের মাধ্যমে এটি করা যাবে।
লোকেশন অ্যাকসেস বন্ধ করুন: এ সেটিং পরিবর্তনের জন্য ইনস্টাগ্রাম অ্যাপের বাইরে যেতে হবে। লোকেশন সেটিং পরিবর্তন করা প্রয়োজন কারণ, একজন ব্যবহারকারী কোথায় আছেন সেটিও ক্রমাগত ট্র্যাক করছে অ্যাপটি। ব্যবহারকারীর জন্য বিশেষভাবে তৈরি বিজ্ঞাপন প্রচার করতে ও নির্দিষ্ট ‘ফর ইউ’ পেইজ তৈরির জন্য কোম্পানি এ পন্থা ব্যবহার করে থাকে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে হাও-টু গিক। তবে, কেউ চাইলে লোকেশন অ্যাকসেস বন্ধ করে এ ‘জিও-ট্র্যাকিং’ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিতে পারেন। প্রথমে, ফোনের সেটিংস অ্যাপটি চালু করুন। এরপর ‘লোকেশন’ পার্মিশন সেটিংয়ে যান। এবার জেনারেল সেটিং চালু করে নিতে স্ক্রল করুন, যতক্ষণ না ইনস্টাগ্রাম অ্যাপটি দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে প্রবেশ করেই বেশ কিছু লোকেশন সেটিংস দেখতে পাবেন। এ ছাড়া, হোম পেইজে অ্যাপের আইকনের ওপরে চাপ দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। এরপর একটি মেনু আসবে। সেখানে ‘অ্যাপ ইনফো’ অপশনটি সিলেক্ট করুন। এর পরের পেইজের ‘অ্যাপ পার্মিশনস’ অপশন থেকেই লোকেশন অ্যাকসেস বন্ধ করে দিতে পারবেন।
অ্যাক্টিভিটি স্ট্যাটাস বন্ধ করুন: কেউ যখন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন তখন তার প্রোফাইলের পাশে একটি সবুজ বিন্দু জ্বলতে দেখা যায়। এটিকেই বলে অ্যাক্টিভিটি স্যাটাস। অ্যাক্টিভিটি স্ট্যাটাস বন্ধ করার জন্য প্রথমে ‘সেটিং ও অ্যাক্টিভিটি’ অপশনে যান। এরপরে, মেসেজেস অ্যান্ড স্টোরি রিপ্লাইস’ অপশন বেছে নিন। এরপর ‘শো অ্যাক্টিভিটি স্ট্যাটাস’ অপশন পাওয়া যাবে। সেখান থেকেই এটি বন্ধ করে নিতে পারেন।
ব্লক অথবা রেসট্রিক্ট অপশন ব্যবহার করুন: অনেক ব্যবহারকারীই নিজের প্রোফাইল পাবলিক বা সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে চান। তবে, অনেক সময়েই কোনো নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট বা মানুষ তাদেরকে অনলাইনে হয়রানি করতে পারে। এ ক্ষেত্রেও চিন্তার কিছু নেই, ইনস্টাগ্রামে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট ব্লক করে ফেলা যায়। প্রথমে যাকে ব্লক করতে চান তার প্রোফাইলে প্রবেশ করুন, এবং ওপরের ডান কোণায় তিনটি ডট আইকনে চাপ দিন। এবারে একটি ড্রপ ডাউন মেনু আসবে সেখানে লাল কালিতে লেখা তিনটি অপশন দেখতে পাবেন, ব্লক, রেস্ট্রিক্ট ও রিপোর্ট। প্রোফাইলটির সঙ্গে একেবারেই কোনো যোগাযোগ না রাখতে চাইলে ব্লক অপশনে চাপুন। তবে, কেউ যদি চান কেবল কয়েকটি ফিচার থেকে সরিয়ে রাখবে, রেসট্রিক্ট ফিচার ব্যবহার করতে পারেন। এতে ওই প্রোফাইলের সঙ্গে যোগাযোগ কমে যাবে। আর রিপোর্ট অপশনের মাধ্যমে প্রোফাইলটির কোনো অনৈতিক কার্যক্রমের বিষয় সম্পূর্ণ বেনামে মেটার কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন ব্যবহারকারী।