৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৩য় ধাপে গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত হয়েছে পটিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। প্রথমবারের মত নির্বাচন করে হেভিওয়েট প্রার্থীকে হারিয়ে বাজিমাত করলেন পটিয়ার দিদারুল আলম। তিনি বঙ্গবন্ধুর চাচা খ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেকের সন্তান। তাঁর পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর তৎকালীন বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক। চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমদ চৌধুরী ও এম এ হান্নানের সাথে আওয়ামী রাজনীতির নেতৃত্ব দিয়েছেন চাচা খালেক। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি শোভনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ফলে বাবার সুনাম অনেকটা ছেলে দিদারের সফলতায় পাথেয় হয়েছে বলে অনেকের ধারণা। চেয়ারম্যান হওয়ার খবরে আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন তার নির্বাচনী এলাকা পটিয়ার জনগন। দিদারুল আলমের নির্বাচিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন পটিয়ার বিভিন্ন স্তরের মানুষ। প্রথমবার নির্বাচন করেই পটিয়া পৌরসভার দুই বারের মেয়র ও পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেভিওয়েট প্রার্থী অধ্যাপক হারুনর রশীদ কে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। সবার নজর এখন তার দিকে। তারুণ্যের এ জয় উপজেলাকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা পটিয়াবাসীর। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আশার আলো জ্বালিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার । এতে এই উপজেলার রাজনীতিতে নয়া সমীকরণের সৃষ্টি হয়েছে। এই বিজয় আগামীর রাজনীতিতে নতুনের বার্তা বয়ে এনেছে বলেও মনে করছেন ভোটার-সমর্থকরা। প্রথম বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি পর তিনি দেখিয়েছেন আরেক চমক। টানা তিন দিন তাঁর শোভনদন্ডীর গ্রামের বাড়িতে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর এলাকা থেকে দলে দলে আসা কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। এসময় আপ্যায়নের কোন কমতি রাখেননি তিনি। পটিয়া উপজেলার ১২৭টি কেন্দ্রে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী দিদারুল আলম দিদারের প্রাপ্ত ভোট ৫৬ হাজার ৫৪১টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের প্রার্থী হাজী মো. হারুনর রশীদ পেয়েছেন ৪৬ হাজার ১৪২ টি ভোট। বুধবার (২৯ মে) রাতে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার আরিফুল ইসলাম উপজেলা কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে প্রার্থী ও কর্মীদের উপস্থিতিতে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। পটিয়ার রাজনীতিতে ভাগ্যবান পুরুষ দিদারুল আলম দিদার । কর্মজীবনে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী।রাজনীতির লক্ষ্যে তিনি কখনো ব্যর্থ হননি। সূত্র জানায়, তিনি একজন তৃণমূল থেকে বেড়ে ওঠা একজন আপাদমস্তক আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব। তিনি ১৯৮৮ সালের দিকে শোভনদন্ডী স্কুল ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মহানগরে সরকারী হাজী মোঃ মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। কয়েক দফে সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। ২০০১ ইং সালে চট্টগ্রামে জামাত শিবির এর ব্রাশ ফায়ারে নিহত শহীদ ৮ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুর পর শেখ হাসিনার নির্দেশে তৎকালীন সময়ে গঠিত ১২ সদস্য বিশিষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ষ্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদেরও (লিয়াকত সিকদার – নজরুল ইসলাম বাবু পরিষদ) সদস্য ছিলেন। তিনি পরপর দুইবার পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের (শামসুজ্জামান-বিজন চক্রবর্তী ও রাশেদ মনোয়ার-নাছির কমিটি) সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক। তাছাড়া তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন। তিনি পলোগ্রাউন্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি। তিনি চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব,আগ্রবাদের চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল, পটিয়া প্রেস ক্লাব ও কদম মোবারক মুসলিম এতিমখানার আজীবন সদস্য। এছাড়াও তিনি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ ও দি চিটাগং কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর সদস্য। নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল আলম দিদার বলেন, আমি হাঁটতে চাই জনতার পাশে। আমার এই বিজয় দলমত নির্বিশেষে সকল পটিয়াবাসীর। আমি চেষ্টা করব পটিয়া উপজেলাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে। একটি আধুনিক উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট মডেল পটিয়া গঠন আমার স্বপ্ন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর নীতি, আদর্শ, গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচীতে সম্পূর্ণ বিশ্বাসী হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনা ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচল আস্থা রেখে দল ও পটিয়ার উন্নয়নে কাজ করে যাবো।