রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন

পটুয়াখালীতে টেস্টার দিয়ে মামাতো ভাইয়ের দুই চোখ নষ্ট করার অভিযোগ

মোস্তাফিজুর রহমান সুজন পটুয়াখালী
  • আপডেট সময় রবিবার, ২ জুন, ২০২৪

পটুয়াখালীতে আপন ফুফাতো ভাই চোখ নষ্ট করে দিলেন মামাতো ভাই রেজাউল মৃধার ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের উত্তর ধরান্দি গ্রামে। উল্লেখ্য গতো ২৩.৪.২০২৩ মামাতো ভাই রেজাউল মৃধার চোখ ইস্ক্র ড্রাইভার দিয়ে নষ্ট করে ফেলেন আপন ফুফাতো ভাই হাবিব খান পিং মৃত নয়ন খান ও তার বাহিনী। রেজাউল মৃধা পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের উত্তর ধরান্দি গ্রামের রাজ্জাক মৃধার ছেলে। মামলা সূত্রে জানাযায়, ভিকটিম রেজাউল মৃধা(৩৫) এবং এজাহার নামীয় ১ নং আসামী মো. হাবিব খান(৩০) সম্পর্কে আপন মামাতো ফুফাতো ভাই একই এলাকায় বসবাস ভিকটিম মো. রেজাউল মৃধা তার বাড়ির সামনে মোটর পার্সের দোকান দেয়। পক্ষান্তরে অত্র মামলার আসামী মো. হাবিব খান পেশায় রাজ মিস্ত্রীর কাজ করে। অত্র মামলার ঘটনার অনুমান এক দেড় মাস পূর্বে ভিকটিম মো. রেজাউল মৃধার স্ত্রী সাক্ষী মোসাঃ খালেদা আক্তার এর ইমো নাম্বারে রাত অনুমান ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার সময় কল আসে তখন স্ত্রী খালেদার ফোন স্বামী রেজাউল মৃধার হাতে ছিল তখন রেজাউল মৃধা ফোন রিসিভ করলে অপর প্রান্ত থেকে কোন কথা বলেনা। এসময় রেজাউল মৃধা তাহার স্ত্রী খালেদার কাছে ফোন দিয়া কথা বলতে বলিলে, তখন অপর প্রান্ত থেকে কথা বলে এবং অশ্লীল কথাবার্তা বলে। ভিকটিম রেজাউল মৃধা তখন ফোন আসা ব্যাক্তির নাম ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে অপর প্রান্ত থেকে বলে আমি হাবিব। তখন ভিকটিম রেজাউলের স্ত্রী খালেদা আক্তার মোবাইলের লাইন কেটে দেয় মোবাইল কেটে দিলে ১নং আসামী হাবিব খান উক্ত ইমো নাম্বারে ফোন করতে থাকে কিন্তু খালেদা আক্তার ফোন রিসিভ করেনি। এই ঘটনার ১ মাস আগে আসামী হাবিব খান তার অন্য ফুফুর বাড়িতে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করেছিল সেই ফুফুর বাড়ি ভিকটিম রেজাউল মৃধার বাড়ির পাশে হওয়ায়, আসামী হাবিব খান ঐদিন দুপুরে রাজমিস্ত্রীর কাজ রেখে রেজাউলের বাড়িতে যায়। তখন ভিকটিম রেজাউল এর স্ত্রী খালেদা আক্তার দুপুরে ভাত খাইতে ছিলো আসামী হাবিব ঘরে ঢুকে খালেদা আক্তার এর কাছে ভিকটিম রেজাউল মৃধার কথা জিজ্ঞেস করলে খালেদা বলেন, দোকানের মাল আনতে তিনি পটুয়াখালী গিয়েছে। তখন আসামী মো. হাবিব খান তার মোবাইল ফোন দিয়া ভিকটিম রেজাউল মৃধা কে ফোন করে বলে তুই কখন আসবি তখন রেজাউল মৃধা বলে আমি পটুয়াখালী আছি। আমার আসতে দুই ঘন্টা সময় লাগবে কিন্তু ভিকটিম রেজাউল মৃধা তখন হাজির হাট থাকায় এবং আসামী হাবিব খানের কথায় সন্দেহ হওয়ায় সে শহরে না গিযে দ্রুত বাড়িতে ফিরে আসে। বাড়িতে ফিরে আসিয়া রেজাউল মৃধা আসামী হাবিব খানকে তার ঘরের পূর্ব পার্শ্বের ঘরে লুকিয়ে থাকতে দেখিয়াও না দেখার ভান করিয়া স্ত্রী খালেদা আক্তারকে হাবিবের আসার কারন জিজ্ঞেসা করিলে, স্ত্রী খালেদা এ ব্যাপরে কিছুই যানেনা বলে জানায়। এদিকে আসামী হাবিব খান তখন উক্ত ঘর থেকে লুকিয়ে বাহির হইয়া চলিয়া যায়। পথিমধ্যে আসামী হাবিবকে বাদী বাড়ি হইতে বাহিরে চলিয়া যাইতে দেখতে পাইলেও তাদের মধ্যে কোন কথাবার্তা হয় নাই। পরবর্তীতে ফোনে রেজাউল ও হাবিবের সাথে ঘরে ঢোকার ব্যাপার নিয়া ঝগরা হয়। ঘটনার দিন গত ২২.৪.২০২৩ ঈদুল ফিতরের দিন হওয়ায় ভিকটিম রেজাউল মৃধা তার বোনের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে ১ নং আসামী হাবিব খানের বাড়ির সামনে রেজাউল মৃধা তার নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে রাত অনুমান ১টার সময় আসামী হাবিব ভিকটিম রেজাউলকে বাড়িত ডাক দিলে রেজাউল সৎ বিশ্বাসে হাবিবের ডাক শুনে তাদের বাড়ির ভিতরে যায়। তখন আসামী হাবিব পূর্ব শত্রুতার জের ধরিয়া ভিকটিম রেজাউল মৃধাকে লাঠি দিয়ে অতর্কিত মাথায় বারি মারা শুরু করলে রেজাউলের মাথায় বারি পরে ফেটে যায় তখন রেজাউল মাটিতে লুটে পরে। এসময় আসামীরা ঘর থেকে বৈদ্যুতিক টেস্টার এনে ভিকটিম রেজাউল মৃধার দুই চোখ খুঁচিয়ে নষ্ট করে ফেলে রেজাউল তখন অজ্ঞান হয়ে পরে ঘটনার খবর পেয়ে পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ ভিকটিম রেজাউল কে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে এবং ঘটনা স্থান থেকে আসামী হাবিব ও তার স্ত্রী আসমাকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং ভিকটিম রেজাউল মৃধা কে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশংকা জনক অবস্থা দেখে তাকে বরিশালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একদিন চিকিৎসা গ্রহনের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভিকটিম রেজাউল মৃধার চোখের অবস্থা গুরতর দেখিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পরামর্শ দেন। তখন ভিকটিম রেজাউল মৃধার পরিবারের লোকজন প্রথমে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল শের ই বাংলা নগর ঢাকায় ভর্তি করেন। এবং ভিকটিম রেজাউল মৃধার পরিবারের অবর্তমানে ভিকটিম রেজাউল মৃধার চাচ মো. খলিল মৃধা পিং মৃত আব্দুল লতিফ মৃধা বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে ২৩ এপ্রিল ২০২৩ পটুয়াখালী সদর থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন মামলা নং ২৪/১০৭,। মামলার আসমীরা হলেন ১। হাবিব খান(৩০) পিং মৃত নয়ন খান ২। অসিম রায় পিং মৃত গেদু রায় ৩। জুরান রায়, পিং মৃত গেদু রায় ৪। আলাম খা পিং মৃত আয়নালী ৫। রনো রায় পিং মৃত গেদু রায় ৬। শুনিল রায় পিং মৃত গেদু রায় ৭। আছমা বেগস স্বামী হাবিব খান ৮ ফিরোজ খান পিং মৃত নয়ন খান। পরবর্তীতে বাদী আসমী হাবিব খানের আপন মামা ভেবে ভিকটিম রেজাউল মৃধার পিতা ও আসামী হাবিব এর মামা বাদী হয়ে আরকে টি মামলা করতে থানায় গেলে থানায় মামলা করতে না পেরে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেম ১ম আমলী আদালতে মামলা করেন যার মামলা নং সি আর ৭১৭/২৩ প্রথম মামলাটি পুলিশ তদন্ত চার্জশিট দিলে চার্জশিটে দেখাযায় ১ নং আসামী হাবিব খান ৪ নং আসামী আলাম খা ও ৭ নং আসমী আছমা বেগম কে রেখে ৫ জনকে বাদ দিয়ে একটি চার্জশিট প্রতিবেদন প্রদান করেন চার্জশিট প্রদানকারী অফিসার এস আই (নিঃ) এইচ এম এ বাশার (বিপি ৭৪৯২৯৮৬৩৩৩) এবং আরেক টি মামলা বাদী ভিকটিম রেজাউল মৃধার পিতা রাজ্জাক মৃধা মামলা নং সি আর ৭১৭/২৩ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ১ম আদালত থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য সরজমিনে গিযে সি আইডি কে নির্দেশ করেন। সিআইডি উপ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বিপি ৭৪৯২০৪৫০৪৫ আসামী হাবিব খান, আলাম খা ও আছমার বিরুদ্ধে বাদীর আনিত অভিযোগ পেনাল কোডের ৩২৫ / ৩২৬(ক) ৩০৭ ধারার অপরাধের সত্যতা পাওয়ার প্রতিবেদন দেয়। বাকি আসামীদের আগের ২৪/১০৭ থানার মামলার প্রতবেদনের মতো আসামীদের নাম কেটে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়। এবিষয়ে ভিকটিম রেজাউল মৃধা বলেন আসামী হাবিব খান আলাম খা আমাকে পাজা করে চেপে ধরে আর অসিম জুরান রনো টেস্টার দিয়া আমার চোখ নষ্ট করে ফেলে যারা আমার চোখ দুইটা নষ্ট করে ফেলছে তাদের কে মামলা দিয়া বাদ দিয়েছে আমিতো আমার সর্বচ্চ খুয়াইলাম এখন বিচারের জন্য মামলা করলাম আসামীদের মামলা তুলে নেয়ার হুমকিতে আছি। আমি পুনরায় এই বাদ দেয়া আসামী অসিম, জুরান, রনো, ও ফিরোজ এই মামলায় না রাজি দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে চাই তা না হইলে তারা আমার পরিবারকে বাচঁতে দিবেনা আমি আমার চোখ হারানো বিচার থেকে বঞ্চিত হবো আমি বিচার চাই আমি আমার পরিবার নিয়ে বাচঁতে চাই। ভিকটিম রেজাউল মৃধার স্ত্রী খালেদা বলেন, আমার ইমো নাম্বারে আসামী হাবিব খান ন্যাকেট ভিডিও পাঠিয়ে বিভিন্ন সময় হয়রানি করে আসতো এবং এই মামলার কতেক আসামীর নাম্বার থেকেও পাঠাতো আমি আমার স্বামীকে জানাইলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলতো এরপর তোকে দিয়ে ভিডিও বানাবো। বিষয়ে দ্বিতীয় মামলার বাদী ভিকটিম রেজাউল মৃধার বাবা মো. রাজ্জাক মৃধা বলেন আমার সোনার সংসার শেষ হয়ে গেছে ছেলের চোখ নষ্ট করেও ক্ষ্যান্ত হয়নাই আমাকে আসামীরা হুমকি দিয়ে বলে মামলা দিয়ে কি করলি আমাদের পুলিশ ধরেনা চার্জশিটে নাম কাইটা দিছে বুইরা তুই মামলা তুলে নে নইলে তোর ছোট পোলারে একই অবস্থা করমু আর তোর কানা পোলার বউরে দিয়া কি করমু তুই পরে বুঝতে পারবি টাহা থাকলে সব হয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com