দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে অংশ নিয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার কার্যপ্রণালী বিধি ৭১ অনুসারে জরুরী জনগুরুত্ব সম্পন্ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ডাক্তার সামন্ত লাল সেনের মনোযোগ আকর্ষণ করে দেওয়া নোটিশের উপর বক্তব্য রাখেন। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর বেঁধে দেওয়া ২ মিনিট সময়ে সাংসদ আনার বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা ঝিনাইদহ সদরের ৪ চারটি ইউনিয়ন, কালীগঞ্জ উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা নিয়ে গঠিত। কালিগঞ্জ উপজেলা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন শত শত রোগী বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সেবা নিতে আসেন। হাসপাতালটিতে বর্তমানে ৫০ শয্যা থাকাই রোগীর চাপে পরিপূর্ণ সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মহান সংসদে অনেকবার ৫০ শয্যা হাসপাতালটি ১০০ শয্যা করার জন্য বলা হলেও এখনো পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সে কারণে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত রোগী, সড়ক দুর্ঘটনার রোগী এবং এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জেলার মধ্যবর্তী স্থানে হাওয়ার কারণেও পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে রেফার্ডকৃত রোগীর সাময়িক চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে থাকে। বর্তমানে হাসপাতালটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হওয়ায় সঠিকভাবে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। উল্লেখ্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ ও সবার জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনবহুল উপজেলার মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে হলে হাসপাতালটিকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করণ করা জরুরী।এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”আর এই বক্তব্যটিই ছিল জাতীয় সংসদে দেওয়া আনোয়ারুল আজিম আনার এর শেষ বক্তব্য।উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই উপজেলা সার্বিক উন্নয়নের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতকে তিনি অগ্রাধিকার দিতেন বরাবরই। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের “ উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র” সভাপতি ছিলেন তিনি। এই কমিটির মিটিং এর নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন এবং হাসপাতাল পরিচালনায় সুবিধা-অসুবিধার ব্যাপারে খোঁজখবর নিতেন। প্রায়ই ভর্তি থাকা রোগীদের দেখতে যেতেন এবং খোঁজখবর নিতেন। সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার এর প্রচেষ্টায় হাসপাতালটি একটি নতুন আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স ,এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি মেশিন পায়। হাসপাতালটিতে আসা সেবা প্রত্যাশীদের জন্য তৈরি করে দেওয়া হয় সাইকেল গ্যারেজ। এভাবে একের পর এক চেষ্টা করে গেছেন সংসদ আনার তার উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধিতে।কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলমগীর হোসেন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার মহোদয় কাজ পাগল একজন লোক ছিলেন। তার আন্তরিকতা ও সহযোগিতার মনোভাব আমিসহ আমার স্টাফদেরকে মুগ্ধ করেছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা থেকে ১০ শয্যায় উন্নীতকরণের জন্য জাতীয় সংসদে যে বক্তব্য তিনি রেখেছিলেন তা কালের সাক্ষী হয়ে রবে চিরকাল। সংসদ আনোয়ারুল আজিমের মতো একজন রাজনীতিবিদ এভাবে আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাবেন তা কখনো কল্পনা করা যায়নি।আমি এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সকলের প্রচলিত আইনে শাস্তি দাবি করছি।