রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিযোগাযোগ কোম্পানি বিটিসিএল, মোবাইল অপারেটর টেলিটক, টেলিফোন শিল্প সংস্থা-টেশিস ও ডাক বিভাগ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রতিমন্ত্রী জানান, কত শতাংশ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে এবং কোন পদ্ধতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারি খাতে দেওয়া হবে, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে আগামী জুলাই মাসে। গত মঙ্গলবার (৪ জুন) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল অনুষ্ঠিত ‘উইমেন ইন টেক’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত এ চার প্রতিষ্ঠানের পেছনে সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকার ওপরে গচ্ছা দিচ্ছে। অথচ সেখানে হাজার হাজার লোকবল রয়েছে, স্থায়ী সম্পদও আছে। চাহিদা অনুযায়ী সেবাও আছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ১৫ মাসের পর্যবেক্ষণে আমি বুঝতে পেরেছি, ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং গুণগত সেবার মান না থাকায় এ লোকসান দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেখুন বছরের পর বছর এভাবে লোকসান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আংশিক নাকি সম্পূর্ণভাবে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে, তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। যদি কোনো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী আকর্ষণ বোধ করে, তখন চেষ্টা করবো এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়। পূর্ণ কিংবা আংশিক বিনিয়োগে আমরা আগ্রহী হতে পারি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, অপারেশনাল বা ম্যানেজমেন্ট পর্যায়েও যদি অংশীদারত্বের প্রস্তাব আসে আমরা সে বিষয়েও চেষ্টা করবো। এর মাধ্যমে আমরা হয়তো বিটিসিএল, টেলিটক এবং টেশিসকে আর্থিক লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবো। একইভাবে ডাক বিভাগের সম্পদকে বেসরকারি খাত ও নাগরিকদের চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করে লাভজনক করতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।
‘এবার যদি আমি টেলিটক প্রসঙ্গে আসি, তাহলে সেটা নিয়ে একটা খোঁড়া যুক্তি আছে। সেটা হলো—টেলিটক না থাকলে অন্য মোবাইল অপারেটরদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। আমি মনে করি এটি খোঁড়া যুক্তি। বিটিআরসি তো আছেই মোবাইল অপারেটদের নিয়ন্ত্রক হিসেবে। তারা সেটা নিয়ন্ত্রণ করবে।’ যোগ করেন পলক।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিটিআরসিকে আধুনিক, শক্তিশালী এবং ব্যবসাবান্ধব করতে চাচ্ছি। যার কারণে আমরা টেলিকম আইন করতে যাচ্ছি। আমাদের কোম্পানিগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপটাই ভালো হবে। সেক্ষেত্রে কোন ধরনের পার্টনারশিপে যাবো, তা জুনের শেষে তাদের প্রতিবেদন দেখে প্রধানমন্ত্রী এবং আইসিটি উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত করবো।