নেত্রকোনা শহরের উত্তর দিক দিয়ে যে বাইপাস (লিংক রোড) সড়কটি নির্মিত হচ্ছে তা নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না এবং কাজ শেষ করার জন্য আরো দুই বছর সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।আর গত তিন বছরে সড়কের ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। ভূমি অধিগ্রহনের কাজ শেষ না হওয়াতে সড়ক নির্মাণ কাজ পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এবার জমি অধিগ্রহনের কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। কাজের সময় বাড়ানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে, নেত্রকোনা শহরের রাজুর বাজারস্থ নেত্রকোনা শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক এলাকা থেকে বাংলা এলাকা পর্যন্ত আরো তিন কিলোমিটার সড়ক বর্ধিত করনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ। আর এ কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাইপাস সড়ক নির্মাণ শেষ হবে না কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে। ২০১৯ সনে বাইপাস সড়ক নির্মান প্রকল্প শুরু করে ২০২৩ সনের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা ছিল। কিন্তু পরে তা ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহন কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় না হওয়ায় তা পুনরায় পিছিয়ে ২০২৪ এর জুনের মধ্যে শেষ করার জন্য সমায় বাড়ানো হয়। কিন্তু একই কারণে এবং সড়কের বর্ধিত অংশ নির্মান প্রকল্প নেয়ায় তা পিছিয়ে এখন ২০২৬ সন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এই বাইপাস সড়কে ৪টি পাকা সেতু ও ২১ টি কালর্ভাট নিমান ও সড়ক নির্মান সহ এই ব্যায় ধরা হয়েছে ২৫৭ কোটি ২১ লাখ ৭২ হাজার টাকা। জমি অধিগ্রহনের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৬৯ কোটি টাকা। আর সড়কের বর্ধিত অংশের জন্য আরো ২৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নেত্রকোনা সড়ক জনপথ বিভাগ সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলেও জমি অধিগ্রহন জটিলতায় তা শেষ হতে পারেনি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। জমির প্রকৃত মালিকানা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় সড়ক নির্মানের জন্য জমি অধিগ্রহনে যেমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। ঠিকাদাররা জমি তাদের বুঝিয়ে দেবার জন্য চাপ দিলেও তা সম্ভব হয় নাই। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জমি অধিগ্রহনের সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখান সরকান জমির মালিকদের ৮ ধারা জারি করে জমির মালিকদের টাকা প্রদান করে অধিকৃত জমি সড়কও জনপথ বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। তবে সড়কের বর্ধিত অংশের কাজ শেষ হতে দেরি হবে। কারণ এই তিন কিলোমিটার জমি এখানো জরিপ করা হয় নাই এবং অধিগ্রহনও হয় নাই। নেত্রকোনা শহরের বসবাসকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়াতে শহরের মধ্য দিয়ে বড়বড় যান বাহন চলাচল করায় পথচারিরা আতংকের মধ্য দিয়ে চলাচল করেন। এছাড়া যানজটতো লেগেই আছে। তিনি দ্রুত বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান। নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা শহরের মধ্য দিয়ে যাতে ভারি যানবাহন যেমন ট্রাক বাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল না করে তার জন্য নেত্রকোনায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক (বাই পাশ সড়ক) নির্মাণের কাজ নেয়া হয়। নেত্রকোনা সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের চল্লিশার নুরুলিয়া গ্রাম থেকে সড়ক শুরু হয়ে কুনিয়া, মেদনি এবং রাজুৃর বাজার এলাকায় গিয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা সড়কের সাথে সংযোগ হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই সড়ক নির্মান করছে। ইতিমধ্যে সড়কের বড় বড় ৪টি পাকা সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের মাটি ফেলার সাথে সাথে বালিও সুড়কির মিশ্রণে কমপেক্টের কাজও চলছে। বন্যার কবল বা বর্ষনের কবল থেকে সড়কটি রক্ষার জন্য প্রটেকশন ওয়াল ও নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শামীম হোসেন বলেন, বাই পাস সড়কটি কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য জোর তদারকি চালানো হচ্ছে। ৯ দশমিক ৭ মিটার প্রসস্ত এই সড়কটি চালু হলে বড় বড় যান বাহন চলাচলে অর কোন সমস্যা থাকবে না। নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আলনূর সালেহীন এই প্রতিনিধিকে বলেন, জমির অধিগ্রহনের জটিলতা শেষ। এখন জমির মালিক যারা এখানো জমির টাকা পায়নি, তাদেরকে জেলা প্রশাসন হতে টাকা প্রদান করা হবে। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে বর্ধিত অংশ ছাড়া মূল সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলেও তিনি জানান।