শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার চারটি পোশাক কারখানায় ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। এসময় লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও আগুন নেভাতে বাধা দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
গত রোববার (৪ আগস্ট) বিকেলে আশুলিয়ায় কবিরপুরের বেক্সিমকো পিপিই ইন্ড্রাস্টিয়াল পার্ক, জিরানী এলাকার সিনহা নিট অ্যান্ড ডেনিমস লিমিটেড, নরসিংহপুর এলাকার হামীম গ্রুপের ঝুটের গুদাম ও একই এলাকার শারমিন গ্রুপে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, এক দফা দাবিতে মিছিল করে জিরানী এলাকায় সিনহা নিট অ্যান্ড ডেনিমস লিমিটেড কারখানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। পরে তারা আশপাশের এলাকায় তা-ব চালিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে। একপর্যায়ে কারখানার প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করে লুটপাট চালায়। পরে তারা কারখানার কয়েকটি পয়েন্টে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা পুরো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে।
একইভাবে হামলা চালানো হয় কবিরপুর এলাকায় বেক্সিমকো পিপিই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে। ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কারখানাটি। কারখানা দুটিতে দীর্ঘ সময় আগুন জ্বললেও বিক্ষোভকারীদের বাধায় আগুন নেভাতে যেতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
সন্ধ্যায় আশুলিয়ার নরসিংহপুর
এলাকার হামীম গ্রুপের ঝুটের গুদামে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। একই সময় আগুন দেওয়া হয় পাশের কারখানা শারমিন গ্রুপের তিনটি লাইনে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এসময় দুর্বৃত্তরা তাদের বাধা দেয়।
জিরাবো মডার্ন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের (ঢাকা অঞ্চল-৪) উপসহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘সিনহা নিট অ্যান্ড ডেনিমস লিমিটেড কারখানায় আগুনের খবর পেলেও আন্দোলনকারীরা আমাদের সেখানে যেতে দেয়নি। আমাদের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। হামীম গ্রুপের কারখানার ঝুটের গুদামে ও গাড়িতে আগুন দিয়েছে। আমরা পৌঁছালেও বিক্ষোভকারীরা কাজ করতে দিচ্ছে না। এছাড়া কবিরপুরে বেক্সিমকো পিপিই ইন্ড্রাস্টিয়াল পার্কে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়েছি।’ এদিকে দেশের সব পোশাক ও বস্ত্র কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনা ও তিনদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় বিজিএমইএ এক বার্তায় জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় শ্রমিক-কর্মচারী ভাইবোনদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সব পোশাক শিল্প কারখানা বন্ধ রাখার জন্য মালিক ভাইবোনদের অনুরোধ করা হলো।
অন্যদিকে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমইএ) সেক্রেটারি জেনারেল বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাকির এক বিবৃতিতে বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ৫ থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বিটিএমএ’র সদস্যভুক্ত সব কারখানা বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি এবং সরকারের ঘোষণার প্রেক্ষাপটে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও বিবৃতিতে জানান তিনি।