সাভারে এক যোগে শত শত শ্রমিক নেমে এসেছেন মহাসড়কে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা দূরের কথা, নিজেদের নিরাপত্তার কথাটুকুও না ভেবে শ্রমিকরা সবাই সামিল হয়েছিলেন প্রতিবাদে। মহামারি নোভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চলমান সংকটের মধ্যেই সাভারে দু’টি পোশাক কারখানার কয়েকশ’ শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবাদে বুধবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে সাভারের হেমায়েতপুরে অবনী গ্রুপের প্রতিষ্ঠান অবনী ফ্যাশন ও ব্যাবিলন ক্যাজুয়্যাল ওয়্যারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিদেশি ক্রেতারা একের পর এক অর্ডার বাতিল করায় তারা বাধ্য হয়ে এ পরিস্থিতির মধ্যে শ্রমিকদের ছাঁটাই করেছেন। বিক্ষোভকারীরা দাবি করছেন, ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ এখনো নিশ্চিত করে জানায়নি প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যাটি কত।
শ্রমিকরা বলছেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা না মেনে আজও কারখানা দু’টি খোলা রাখে মালিক পক্ষ। সারাদিন শ্রমিকদের কাজ করিয়ে গত মাসের বেতন তুলে দেওয়া হয়।
দিন শেষে তাদের একটি কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হলে কারখানা জুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই কাগজে শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন মর্মে জোরপূর্বক সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে এসে অবস্থান নেন কারখানার সামনে হেমায়েতপুর-সিংগাইর মহাসড়কের পদ্মার মোড়ে। এ সময় ওই এলাকার পার্শ্ববর্তী একই গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ক্রেতারা আশঙ্কাজনকভাবে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করায় এবং আগামী দিনগুলোতে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় বাধ্য হয়েই তারা শ্রমিক ছাঁটাই করেছেন।
তবে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের সংখ্যা তিনি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয়রা বলছেন, একযোগে শত শত শ্রমিক সঙ্গরোধ বজায় না মেনে বিক্ষোভ করছেন। এতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের ব্যাপারে সতর্ক না হয়ে শ্রমিকদের এই পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। এই মুহূর্তে ছাঁটাই করা হলে প্রতিবাদ আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কর্মকর্তা জানান, হুট করে এভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সম্ভবত আমাদের ঠিক হয়নি। আমরা শ্রমিকদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি। তাদের আশ্বস্ত করছি। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হলেও শ্রমিকদের ছাঁটাই না করেও বিকল্প উপায়গুলো আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি।
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র