গতকাল শনিবার সকালে দুপচাঁচিয়া উপজেলা বাসীর আয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামছুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত, কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অসৎ আচরণ সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে তার অপসারণের দাবিতে সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এদিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রায় ২ঘন্টা ব্যাপি উক্ত মানববন্ধন চলাকালীন সময়ে বক্তব্য রাখেন, দুপচাঁচিয়া পৌর বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ্ব মফিজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান তুহিন, উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মেশকাতুর রহমান, জান্নাতুল ফেরদৌস সাখিদার, পৌর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুস আলী মহলদার, জাহেদুল হক তালুকদার কাজল, তালোড়া পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এমরান আলী রিপু, দুপচাঁচিয়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান সনি, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ওয়ালিউল ইসলাম পুটু, সদস্য সচিব মেহেদী হাসান, পৌর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব ওয়াসিম মহলদার, সাংবাদিক তৌফিক আলম, ভুক্তভুগি পরিচ্ছন্নতা কর্মী সাহিদা আক্তার, রাজিয়া সুলতানা, বিএনপি নেতা মহসিন আলী, শামছুল হুদা প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ডাক্তার শামছুন্নাহার গত ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২২ তারিখে দুপচাঁচিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকে বিএনপি ও জামায়াত আদর্শে বিশ্বাসী ডাক্তার সহ বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীকে অন্যায়ভাবে অন্যত্র বদলী করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাঈদ মো: আব্দুল্লাহ্-আল-হানিফ, সহকারী সার্জন ডা. এ এইচ এম তনয় মোস্তাফিজসহ ২০ জন চিকিৎসক ঢাকা মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকের নিকট এই অভিযোগ করেন। কোভিড-১৯ কাজে নিয়োজিত জুলাই ২১ থেকে জানুয়ারী ২২ পর্যন্ত ভলেন্টিয়ারের অর্থ আত্মসাত করেছে। ভুক্তভুগি পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও করে। এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিবছর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বরাদ্দ অর্থ সরকারি ভাবে আসলেও পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে পরিচ্ছন্নতা করে ওই অর্থ আত্মসাত করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে মৌসুমি ফল আম, কাঁঠাল, বেল ইত্যাদি গাছ সহ মুল্যবান গাছ কর্তন করে তা বিক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ করেছে। নিয়ম বহিভূত ভাবে মাঠকর্মী রবিউল ইসলামকে ষ্টোর কিপারের দায়িত্ব দিয়ে ভূয়া ভাউচারে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর থানা সত্বেও বিদ্যুৎ চলে গেলে তা সচল না করায় রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র বিল ভাউচার ক্যাশবুক কম্পিউটার অন্যান্য কাগজপত্র নিজ বাসভবনে সংরক্ষণ করে এবং বাসা থেকে অফিস পরিচালনা করেন। পরিচ্ছন্নতা কর্মী সাহিদা, মর্জিনা, জেসমিন, আনোয়ারা বেগমের দৈনিক ৪শ’ টাকা ভাতা থাকলেও তাদেরকে ১শ’ টাকা করে প্রদান করে বাঁকা টাকা আত্মসাৎ করেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে অন্যত্র বদলী করায় বর্তমানে প্রধান সহকারী, ক্যাশিয়ার, ষ্টোর কিপার, অফিস সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ফার্মাসিস্ট এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শুন্য। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসন কার্যক্রম সম্পন্ন ভেঙ্গে গেছে। তার বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগগুলো একাধিকবার মহাপরিচালক স্বাস্থ্য, পরিচালক স্বাস্থ্য রাজশাহী বিভাগ সহ বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া হয়। একাধিকবার তদন্ত হলেও অজ্ঞাত কারণে তদন্তগুলো আলোর মুখ দেখে নাই। তারা আরো বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার শামছুন্নাহারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি পুলিশ সহ সেনাবাহীনির কথা বলে হুমকিও প্রদান করেন। বক্তারা অবিলম্বে তার অভিযোগগুলো পুনঃরায় তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ সহ তাকে অপসারণের দাবি জানান। এ বিষয়ে বগুড়া সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগসহ অভিযোগের অনুলিপি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজশাহী স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করেছেন বলে তারা বক্তব্যে উল্লেখ করেন।