সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার দুপুরে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সিলেট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১০ এর আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। শুক্রবার রাতে ভারতে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বিজিবি। কানাইঘাট সীমান্তে আটকের পর স্থানীয় জনতার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন মানিক। তার এই বক্তব্যটি ভাইরাল হয়েছে। ওই সময় ঘটনাস্থলে থাকা একজন তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, কেনো পালাতে চেয়েছিলেন। উত্তরে বলেন, প্রশাসনের ভয়ে পালাতে চেয়েছিলাম। তখন অপরপাশ থেকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনি তো অনেক জুলুম করেছেন।’ বিজিবি সদস্যদের এমন প্রশ্নের জবাবে মানিক বলেন, ‘আমি কোনো জুলুম করিনি।’
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী দনা এলাকা দিয়ে পালানোর সময় সঙ্গে করে ৭০ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। আটকের সময় একটি ভিডিও রেকর্ড করা হয় মানিকের।
ভিডিওতে দেখা যায় বিজিবি সদস্যরা তার পরিচয় জানতে চান। নিজের পরিচয় স্বীকার করে মানিক বলেন, আমি বিচারপতি মানিক। আটকের পর স্বীকারোক্তিতে তিনি বলেন, আমি ১৫ হাজার টাকার কথা বলে সীমান্ত পার হতে চাচ্ছিলাম। পরে আমাকে দুই ছেলে ভারত সীমান্তে নিয়ে আমার সঙ্গে থাকা সব টাকা এবং মোবাইল নিয়ে যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, কেউ সাবেক বিচারপতি মানিকের গলায় গামছা পেঁচিয়ে হাত দিয়ে ধরে রেখেছেন। আরেকজন তার নাম জিজ্ঞেস করছেন। এ সময় বিচারপতি মানিক তার পুরো নাম বলেন এবং তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ বলে জানান। সঙ্গে কী আছে জানতে চলে মানিক বলেন, আমার কাছে অনেক টাকা ছিল। আমাকে মেরে ৬০-৭০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে দুজন। এখন আমার সঙ্গে বৃটিশ পাসপোর্ট, বাংলা পাসপোর্ট আর কিছু টাকা আছে।
দালাল ধরে ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন, সঙ্গে ছিল ২ পাসপোর্ট, ৭০ লাখ টাকা: সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করেছে বিজিবি। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে রাত ১০টার দিকে ডনা বিজিবি ক্যাম্পে তাকে আটক করা হয়। বিজিবি সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
স্থানীয় দালাল ধরে তিনি ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন। আটকের সময় স্থানীয়দের তিনি জানান, তার সঙ্গে বাংলাদেশি এবং বৃটিশ পাসপোর্ট আছে। নগদ টাকা আছে ৪০ হাজার। আগের দিন তার সঙ্গে থাকা ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা দুই যুবক মারধর করে নিয়ে গেছে। শুধু সীমান্ত পারের জন্য নৌকার মাঝিকে ১৫ হাজার টাকা দেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায় বিচারপতি মানিককে প্রশ্ন করছেন কয়েকজন। এসময় তিনি তার নাম বলছেন। নিজের অসুস্থতার কথা বলছেন। দালালদের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার কথা বলেন। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার তথ্য জানান। কেন পালাচ্ছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন ভয়ে পালাচ্ছি। কার ভয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রশাসনের। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায় জঙ্গলে কলাপাতা বিছিয়ে তিনি শুয়ে আছেন। কোনো একজনের সঙ্গে কথা বলছেন। তাকে টাকা দেয়ার কথা বলছেন। ওই ব্যক্তি বলছেন আমাদের টাকা লাগবে না।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মানিক বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের ঘোর সমর্থক ছিলেন। সরকারের কার্যক্রম সমর্থন করে টকশোতে আলোচনা করতেন। সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে।