বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই আমাদের সংস্কৃতি আবর্তিত হতে হবে- ডা. শফিকুর রহমান

খবরপত্র অন লাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪
আজ ৩১ আগস্ট সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান

সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্ট এর কবি, লেখক ও শিল্পী সমাবেশ

 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিশ্বাসের প্রকাশ হচ্ছে সংস্কৃতি। অতএব সংস্কৃতিকে বাদ দিয়ে বিশ্বাস নয় আবার আমার বিশ্বাসকে দূরে রেখে সংস্কৃতি নয়। যে জাতির নিজস্ব কোনো বিশ্বাস নেই, সংস্কৃতি নেই, অন্যেরটা অনুস্মরণ করে চলে সে জাতি সব সময়ে পিছনেই পড়ে থাকে। অগ্রসর হয়েও তারা জাতিকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়। অন্যের সংস্কৃতিকে যারা অনুস্মরণ করে তারা কখনই আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন জাতি হতে পারে না। তারা হয় সংকীর্ণ, পশ্চাৎপদ, বিধ্বস্ত একটা জাতি। বাংলাদেশে আমাদের ইতিহাস তেমনটি নয়। আমাদের বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই আমাদের সংস্কৃতি আবর্তিত। বাংলাদেশ বিভিন্ন ধর্ম বর্ণের মানুষের উম্মুক্ত বসবাসের স্থল আবাসভূমি। তবে মহান আল্লাহর নিজস্ব পরিকল্পনা এটা যে, মোট জনগোষ্ঠীর শতকরা ৯৫% মানুষ ধর্মীয় পরিচয়ে মুসলিম হিসেবে এখানে সুপ্রতিষ্ঠিত।

সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্ট আয়োজিত কবি, লেখক ও শিল্পী সমাবেশটি আজ ৩১ আগস্ট সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কবি, লেখক ও শিল্পী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণে আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল। কবি ও সম্পাদক মোশাররফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে এবং সাংস্কৃতিক ঐক্য ফ্রন্টের সেক্রেটারি মাহবুব মুকুল এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, অন্যতম সাংস্কৃতিক নির্দেশক কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও মুহা. কামাল হোসাইন। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমির সভাপতি আবেদুর রহমান, কিডস ক্রিয়েশনের সিইও বাচিক শিল্পী শরীফ বায়েজিদ মাহমুদ, সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি যাকিউল হক জাকী, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবু তাহের বেলাল, কবি ও সম্পাদক জাকির আবু জাফর, বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীতজ্ঞ সালাউদ্দীন আহমেদ, উপস্থিত ছিলেন চারু শিল্পী পরিষদের সভাপতি ইব্রাহিম মন্ডল, কবি নাসির হেলাল, সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের সহকারী সেক্রেটারি আল্লামা ইকবাল, এম এ তাওহিদ, আব্দুর রহমান, নির্বাহী সদস্য তোফাজ্জল হোসেন, ঢাকা সাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি আফসার নিজাম, মহানগর শিল্পী গোষ্ঠীর পরিচালক আবু রায়হান, শিল্পী শরিফুল ইসলাম, মাহফুজ মামুন, দিদারুল ইসলাম, এমসি মামুন, সাইদুল ইসলাম,আমিনুল্লাহ, একে জিলানী, আলফাজ হোসোন, এসএম ইদ্রিস, আব্দুল্লাহ বিন ফয়েজ, মহানগর নাট্য ও চলচ্চিত্র সংসদের সহকারী পরিচালক আ আ ফারুক খান, হুসনে মোবারক, এবিএম নোমান, আব্দুল হাই সেলিম, জাবির আল মাহমুদ, সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর পরিচালক জাহিদুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক বদিউর রহমান সোহেল, আব্দুল্লাহিল কাফি, জহিরুল ইসলাম, নাবিক সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি কবি তাসনীম মাহমুদ, সহ-সভাপতি কবি সালেহ মাহমুদ, সেক্রেটারি সরদার আব্বাস উদ্দিন, কবি জাফর পাঠান, ডাহুক আবৃত্তি সংসদের পরিচালক তারিক হাসিব, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সংসদের সভাপতি প্রফেসর মঈন উদ্দিন, সহ সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান চার্চিল, ঢাকা সাহিত্য সমাজের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন সরকার, সেক্রেটারি কবি ওয়াহিদ আল হাসান, আল মাহমুদ মঞ্চের সভাপতি আতিকুর রহমান ঝিন্টু, সেক্রেটারি আতাহারুল ইসলাম, সদরঘাট সাহিত্য সংসদের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, কবি আতিফ আবু বকর, কবি গোলাম মোহাম্মদ সংসদের সভাপতি তালুকদার শাহিনুর রহমান, সেক্রেটারি মহিব্বুল্লাহ, কবি ফররুখ সংসদের সভাপতি মোশারফ হোসেন, ঢাকা মিডিয়ার সভাপতি আব্দুল আলিম, সেক্রেটারি ইমরান হুসাইন, মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আব্দুর রউফ, হাসানুজ্জামান, শামসুল আলম বকুল, সংস্কৃতি গ্রুপের আতাউর রহমান, জহির বিন বাশার, ফেরদাউস হাসান, হেরার আলো কালচারাল একাডেমির সভাপতি শামসুদ্দোহা, সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর সহকারী পরিচালক নিয়ামুল হোসাইন প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশে বাকি অন্য ধর্মের যারা আছেন তাদেরও এই মুসলিমেরা সম্মান করে। এই বিশ্বাসের কারণেই বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বে সবচেয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতির সুন্দরতম উদাহরণ। একটি বৈচিত্রময় মেলবন্ধন এদেশে রয়েছে। বিগত ছাত্র জনতার আন্দোলনেও আমরা দেখেছি দেশের সব মন্দির, চার্চ, গির্জা গুলো এই মুসলিমেরা মাদরাসার ছাত্ররা দিন রাত পাহারা দিয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে। কারণ মুসলিমেরা জানে কারো ওপরে জুলুম জবরদস্তি করার কাজ মহান আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কিছু দুস্কৃতিকারী অপরাধ সংঘটিত করে বৃহৎ গোষ্ঠীর ওপরে দোষ চাপিয়ে দিতে চাই। সেই সব সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় সংস্কৃতিকভাবে আমাদেরকে দৃঢ়তা প্রদর্শন করে সবার অন্তরে স্থান করে নিতে হবে। সম্প্রতি আমরা সকল ধর্মের মানুষের সাথে মিশেছি মতামত বিনিময় করেছি। আমরা সকলে মিলে সুখে শান্তিতে বাংলাদেশে বসবাস করতে চাই। আমরা একটি নির্দিষ্ট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি সকলে মিলে আমরা বাংলাদেশী এই হোক আমাদের পরিচয়। কবি, লেখক, শিল্পী, সংবাদিকদের বলা হয় জাতির জাগ্রত বিবেক। আপনাদের কাছে মুসলিম জাতি হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। মুসলিম সংস্কৃতিকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে দীর্ঘ সময়। কিন্তু একথা বিশ্বাস করুন বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ইসলামী আদর্শ ও মুসলিম চেতনা লালন করে জীবনযাপনে অভ্যস্ত অধিকাংশ মানুষ। সেদেশের মানুষের কাছ থেকে বোধ ও ইসলামী বিশ্বাসের চিন্তা ভুলিয়ে দেওয়া সহজ নয়। ইসলামের শিকড় মূল এদেশের অনেক গভীরে মিশে আছে। এটা ব্যাঙের ছাতা নয়, আস্তে করে কেউ তুলে ফেলবে। বাংলাদেশের সবুজ জমিনে ইসলাম হাজার বছরের বটবৃক্ষ হয়ে অবস্থান করছে। ইচ্ছে করলেই কোনো অপশক্তি এটাকে উপড়ে ফেলতে পারবে না।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জনগণের বিশ্বাস ও বোধের আলোকে আমাদের সংস্কৃতিকে আমরা মেলে ধরতে চাই। নতুন বিজয় পরবর্তী এই সময়ে সবচেয়ে সম্ভাবনার অবস্থানে রয়েছে বিশ্বাসের সাংস্কৃতিক ধারা। সুতরাং কালচারাল অঙ্গনকে এমনভাবে সুসজ্জিত করতে হবে যেন, যাতে করে ছাত্র জনতার এই বিজয়কে দীর্ঘস্থায়ী করে মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখা যায়। সামগ্রীকভাবে শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয় বরং মানুষে চিন্তা চেতনাকে পরিশুদ্ধ করতে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। মানুষের শিক্ষা দিক্ষা, আচার আচরণ, নৈতিকতা বোধের আলোকে বাংলাদেশ আগামীতে আরও মজবুতি অর্জন করবে সে প্রত্যাশা আমরা করি।

সভাপতির বক্তব্যে কবি মোশাররফ হোসেন খান বলেন, দেশে যখন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা এলো শাসক ভাবল জনগণ তার অধিন হয়ে গেছে। নব্বই দশকে স্বৈরশাসক ক্ষমতা নিয়ে শাসক মনে করলো আমরাই সব কিছু। এবার শেষ ফ্যাসিবাদ এসে ভেবেছিল তারাও আজীবন জনগণের ওপরে প্রভুত্ব কায়েম করে অবস্থান করবে। সুতরাং ততোদিন পর্যন্ত লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে যতোদিন না কুরআন হাদিস ও ইসলামের সাংস্কৃতিক পূর্ণ বিজয় অর্জন হচ্ছে। আজকে দাবি জানাতে চাই না, তবুও সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের সব কবি লেখক শিল্পীদের সাথে থাকবেন এ আশা আমরা করছি। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকৃত স্বাধীনতা এসে যায় না বরং আমাদের দায়িত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের সাথে সাথে মানবিকমূল্যবোধের আলোকে সাংস্কৃতিক পূর্ণ বিজয় আমাদেরকে অর্জন করতে হবে।-(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com