আগামী নভেম্বরে ডেভিস কাপ ফাইনালের পর অবসর নেবেন টেনিসে ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ী রাফায়েল নাদাল।
গত দুই বছর ধরে চোট-আঘাতের কারণে নাদালকে টেনিস কোর্টে বেশি দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছেন, ‘পেশাদার টেনিস জগত থেকে তিনি অবসর নিতে চলেছেন।‘ সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমি পেশাদার টেনিসের জগত থেকে অসবর নেয়ার কথা জানাচ্ছি।‘ তার চোট-আঘাতের প্রসঙ্গে নাদাল জানান, ‘বাস্তব হলো, গত দুই বছর আমি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছি।‘ নাদাল বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, এই সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে আর খেলা সম্ভব নয়। এটা কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। তবে কোনো একটা সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিতেই হতো।‘ নাদাল টেনিসে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন। ১৪ বার ফ্রেঞ্চ ওপেন-সহ ২২টি প্রধান প্রতিযোগিতায় জিতেছেন। তবে নাদালের টেনিস জীবনে চোট-আঘাতও নিত্যসঙ্গী ছিল। ২০২২ সালের উইম্বলডন খেলতে গিয়ে চোট পান। তারপর তিনি নাম প্রত্যাহার করে নেন। তবে তাকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে কোমরের আঘাত। ২০২৩ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে এই চোট পাওয়ার পর এক বছর টেনিস খেলতে পারেননি তিনি।
নাদালের অবদান: টেনিসে নাদালকে সর্বকালের সেরাদের মধ্যে একজন বলে মনে করা হয়। ১৪ বার ফরাসি ওপেন জেতা নাদালের এই কীর্তি আর কেউ ছুঁতে বা অতিক্রম করতে পারবেন কি না সন্দেহ। এছাড়া নাদাল ইউএস ওপেন, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, উইম্বলডন জিতেছেন। রজার ফেডেরারকে পাঁচ সেটের লড়াইয়ে হারিয়ে তার উইম্বলডন জেতাকে টেনিস ভক্তরা মনে রেখেছেন। এই ম্যাচকেও টেনিস জগতের অন্যতম সেরা ম্যাচ বলে মনে করা হয়।
দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে: টেনিস জীবনে নাদালের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রজার ফেডেরার ও নোভাক জোকোভিচ। নাদালের টেনিস জীবনে প্রথম দিকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফেডেরার। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই দুই মহান টেনিস প্লেয়ারের মধ্যে জয়-পরাজয়ের হিসাব হলো, নাদাল ২৪ বার ও ফেডেরার ১৬ বার জিতেছিলেন।
নাদালের টেনিস জীবনের দ্বিতীয় ভাগে জোকোভিচ ছিলেন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। মূলত, নাদাল প্যারিস অলিম্পিকে যে শেষ ম্যাচ খেলেছেন, সেটাও জোকোভিচের বিরুদ্ধে এবং সেখানে তিনি হেরেছিলেন। নাদালের বিরুদ্ধে জোকোভিচ ৩১ বার জিতেছেন এবং ২৯ বার হেরেছেন। জোকোভিচ ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামও জিতেছেন।
নাদাল বলেন, ‘আমি পুরো টেনিস দুনিয়াকে ধন্যবাদ দিতে চাই, বিশেষ করে যারা এই খেলার সাথে জড়িত এবং আমার চিরপ্রতিদ্বন্দী ছিলেন, তাদের।‘
জোকোভিচ ও ফেডেরারের ছবি দিয়ে নাদাল বলেন, ‘আমি অনেক ঘণ্টা তাদের সাথে কাটিয়েছি। অনেক মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছি। বাকি জীবন তা আমি মনে রাখব।‘ সূত্র : ডয়চে ভেলে