পবিত্র কোরআনে মুসলমানের পারিবারিক বিরোধ নিরসনে ন্যায়পরায়ণ তৃতীয়পক্ষের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাকে ইসলামী পরিভাষায় ‘সালিস’ পদ্ধতি বলে। সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে এই কোরানিক মডেল কার্যকর হতে পারে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশঙ্কা করলে তোমরা স্বামীর পরিবার থেকে একজন ও স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ে নিষ্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৫)
যদি সমাজের একটি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান পরিবারে সালিস নিযুক্ত করা আবশ্যক হয়, তবে উম্মাহর একতা রক্ষায় কেন সালিস নিযুক্ত করা হবে না। যখন মুসলিম উম্মাহর একতা রক্ষা করার জোর তাগিদ কোরআনের একাধিক স্থানে এসেছে। বরং আমরা দেখি, আরো ছোট বিষয়েও ইসলাম সালিস নিযুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। কোনো মুসলিম যখন ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শিকার করে ফেলে, তবে তার ব্যাপারে কোরআনের নির্দেশ হলো—‘হে মুমিনরা! মুহরিম অবস্থায় তোমরা শিকার-জন্তু হত্যা কোরো না; তোমাদের মধ্যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে তা হত্যা করলে যা সে হত্যা করল তার বিনিময় হচ্ছে অনুরূপ গৃহপালিত জন্তু, যার ফায়সালা করবে তোমাদের মধ্যে দুজন ন্যায়বান লোক—কাবায় প্রেরিতব্য কোরবানিরূপে।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৯৫)
সত্যচ্যুত খারেজি সম্প্রদায় যখন আলী (রা.)-এর আনুগত্য অস্বীকার করে এই যুক্তিতে যে তিনি দ্বিনের ব্যাপারে মানুষকে বিচারক হিসেবে গ্রহণ করেছেন, অথচ আল্লাহ বলেছেন ‘হুকুম বা ফায়সালা করার ক্ষমতা কেবল আল্লাহর জন্য’। (সুরা : আনআম, আয়াত : ৫৭)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) তাদের যুক্তি খ-ন করে বলেন, আল্লাহ তাআলা স্বামী ও স্ত্রী, হেরেমে শিকারের ব্যাপারে তৃতীয় ব্যক্তিকে ‘সালিস’ নিযুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।