আওয়ামী লীগের সবশেষ ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতিবছর গড়ে কমপক্ষে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তবে বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট পরিমাণ বের করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন তিনি। গতকাল শনিবার (২ অক্টোবর) ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা জানান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গভর্নর ব্যাংক খাত থেকে যে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হওয়ার কথা বলেছেন, বাস্তবে তার পরিমাণ আরো বেশি। তৎকালীন সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালীরা ব্যাংক খাত ও বাণিজ্যের আড়ালে বছরে ১২-১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে।’ ‘দেড় দশকে রাষ্ট্র কাঠামোকে ব্যবহার করেই পাচার হয়েছে এসব অর্থ,’ বলেন তিনি। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল।’ যে দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে সেই দেশের সাথে আইনি চুক্তি ও সমঝোতার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান। বলেন, রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক ও ব্যবসায়িক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে অর্থ পাচার ও দুর্নীতি বন্ধ হবে না।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাথে বৈঠক করেছে সরকার। আগামী দুই বছরের মধ্যে যদি একটা পয়সাও ফেরত আসে তাহলে সেটাও বড় অর্জন হবে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে ঋণ খেলাপির সংস্কৃতি যারা চালু করেছে, সেই প্রভাবশালীরাই পাঁচতারকা হোটেলে বসে ব্যাংকখাতের নীতি পলিসি তৈরি করতো। বাংলাদেশ ব্যাংক সেসব পলিসি শুধু ঘোষণা করত।