শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ অপরাহ্ন

হিলিতে দেশি মুরগির খামারে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন ফেরদৌসী মনি

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

দিনাজপুরের হিলিতে দেশি মুরগির খামার করে নিজেকে স্বাবলম্বী করার স্বপ্ন দেখছেন হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরমের সহ-সভাপতি ফেরদৌসী মনি। গরু, ছাগল, কবুতর গাড়ল, বিদেশি পাখি ও বিভিন্ন প্রজাতির মুরগি এবং দেশি মুরগিসহ ৭টি খামার রয়েছে তার। বর্তমান তার খামারে আছে ১ হাজার দেশি মুরগি। তার খামারে কাজ করে ৭ জন শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করছেন। হিলির দক্ষিণ বাসুদেবপুর মতিন মন্ডলের চাতালে এই নারী উদ্যোক্তা গড়ে তুলেছেন এসব খামার। বাজারে দেশি মুরগির মাংস ও ডিমের বেশি চাহিদা এবং দাম ভাল থাকায় অন্যান্য মুরগির খামারের পাশাপাশি দেশি মুরগির খামার তৈরিতে ঝুঁকে পড়েছেন তিনি। গত দুই মাস আগে ৪৫ টাকা দরে ১০০০টি দেশি মুরগির বাচ্চা দিয়ে এই খামার শুরু করেন তিনি। অতিযত্নে মুরগিগুলো লালন-পালন করায় তেমন কোন বাচ্চা নষ্ট হয়নি। বর্তমান প্রতিটি মুরগি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বাজারজাতের উপযুক্ত হয়েছে। তবে দেশি মুরগির খামার বৃদ্ধির লক্ষ্যে শুধু মোরগগুলো বিক্রি করবেন। কেননা ডিম পাড়া মুরগি দিয়ে খামার বৃদ্ধি করবেন তিনি। আর মাত্র ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এসব মুরগি ডিম পাড়া শুরু করবে। ঐসব ডিম দিয়ে আরও দেশি মুরগির খামার বৃদ্ধি করবেন এই নারী উদ্যোক্তা। এই ১০০০ দেশি মুরগির জন্য তৈরি আছে একটি সেট। সেটের পাশে রয়েছে ঘেরা এক বিঘার জমি। সকাল হলেই সেট থেকে বেড় হয়ে ঐজমিতে চড়ে বেড়ায় মুরগি। খামারে দেখাশোনার জন্য আছে কয়েকজন শ্রমিক। খাদ্য হিসেবে দেশি মুরগির খামারে দেওয়া হয় গম, ভুট্টা ও চালের গুড়া। এই নারী উদ্যোক্তার খামার দেখে অনেকেই খামার তৈরির স্বপ্ন দেখছেন। স্থানীয় আরিফ আহমেদ বলেন, মতিন মন্ডলের চাতালে ফেরদৌসী মনি আপার বিভিন্ন পশুপাখির খামার আছে। আমি প্রায় সময় এসব খামার দেখতে আসি, অনেক ভাল লাগে। সবচেয়ে বড় বিষয় তার একটা বড় দেশি মুরগির খামার রয়েছে। সচারাচর দেশি মুরগির খামার তেমন চোখে পড়ে না। এটা অনেক লাভজনক খামার। আমারও ইচ্ছে আছে তার পরামর্শ নিয়ে নিজ বাড়িতে একটা দেশি মুরগির খামার করবো। খামারের শ্রমিক আজগর আলী বলেন, এই চাতালে ৭টি খামার আছে, আমরা ৭জন শ্রমিক কাজ করি। এখানে বর্তমান মালিক দেশি মুরগির খামার করেছেন। দেশি মুরগিতে অনেক লাভ, তাই এই খামার তৈরি করেছেন। আমরা এখানে যে পারিশ্রমিক পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার অনেক ভালভাবে চলে। খামারি ফেরদৌসী মনি বলেন, আমি একজন নারী উদ্যোক্তা, হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সহ-সভাপতি। গরু, ছাগল, গাড়ল, কবুতর, বিভিন্ন জাতের মুরগি, বিদেশি পাখিসহ দেশি মুরগির খামার করেছি। বর্তমান নিজেকে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে দেশি মুরগির খামার তৈরি করেছি। কেননা দেশি মুরগির মাংস ও ডিমের অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে, পাশাপাশি দামও ভাল আছে। আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মোরগগুলো বিক্রি করবো। এবং বাঁকি ডিম পাড়া মুরগি দিয়ে খামার বৃদ্ধি করবো। বর্তমান খামারে ১০০০ দেশি মুরগি আছে। আশা করছি নিজেকে স্বাবলম্বী করতে আগামীতে আরও ২০০০ থেকে ৩০০০ দেশি মুরগির খামার তৈরি করবো। হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হামিদা আকতার ডালিম বলেন, আমরা নারী, আমরাও পারি। ইচ্ছে করলে পুরুষের পাশাপাশি সংসারের হাল আমরাও ধরতে পারি। ফেরদৌসী মনি আপা একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। দেশি মুরগির খামার করে তিনি নিজেকে স্বাবলম্বী করছেন। আমরা নারীরা যে যেখানে যে অবস্থায় থাকি না কেন, ইচ্ছে শক্তি থাকলে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করতে সময় লাগবে না। হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি রোমেনা আক্তার মনি বলেন, হাঁটি হাঁটি পা পা করে আমরা হাকিমপুর নারী উদ্যোক্তারা এগিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটি নারী সদস্য কোন না কোন উদ্যোক্তা নিয়ে কাজ করছি। নারী উদ্যোক্তা ফেরদৌসী মনি আপা বিভিন্ন খামারের পাশাপাশি একটি দেশি মুরগির খামার করে লাভবান হচ্ছেন। আমরা প্রতিনিয়ত তার খামার পরিদর্শন করে আসছি। আমি আশাবাদী এই দেশি মুরগির খামার করে তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলবেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com