রাজধানীতে কয়েকটি গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপি জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। গত বৃহস্পতিবার ১২ নভেম্বর রাতে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।
প্রিন্স বলেন, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ উপনির্বাচনের দিনে ঢাকায় কয়েকটি গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও রহস্যজনক এবং একইসাথে উদ্দেশ্যমূলক। এ ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। বিএনপি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়। তিনি বলেন, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ভোটডাকাতি, সন্ত্রাস, কারচুপি গোপন করতেই পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটিয়ে জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চায় সরকার। অতীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। একই কায়দায় আজ এ ঘটনা ঘটিয়ে এর দায়দায়িত্ব বিএনপির ওপর চাপিয়ে অতীতের মতোই বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করতে চায়।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আওয়ামী লীগের ভোটকারচুপির প্রতিবাদে বিএনপির নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল হয়েছে নয়াপল্টনে। বলা হচ্ছে- এই মিছিল থেকে বাসে আগুন দেয়া হয়েছে, যা সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। প্রকৃত অর্থে ক্ষমতাসীনদের এজেন্টরাই এ ঘটনা ঘটিয়ে উদোর পিণ্ডিবুদোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, যারা ভোটডাকাতি করেছে, তারাই ষড়যন্ত্র করে এসব কাণ্ড করছে; অতীতেও তারা একই কাজ করেছে। নির্বাচন হলো উত্তরায় আর গাড়ি জ্বললো দক্ষিণে, এতে বিএনপিকে জড়িত করা হাস্যকর।
প্রিন্স আরও বলেন, শত নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করেও জাতীয় নির্বাচনসহ সকল স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। অথচ সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ না করে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ও অনুগত প্রশাসন অপব্যবহার করে জোরপূর্বক জনরায় ছিনতাই করে চলেছে। সরকার যেনতেনভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতেই গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে দিচ্ছে। বিরোধীদলকে কোনো প্রকার স্পেস দেয়া হচ্ছে না বরং মিথ্যাচার ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য মোটেও শুভ নয়। তিনি আরও বলেন, আজ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিং শেষে দলের অফিস থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুককে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সারাদিন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৫ জন নেতাকর্মীকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমি এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেফতাকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লীউন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সাবেক ছাত্রনেতা শহীদুল্লাহ ইমরান, জাসাসের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-দফতর সম্পাদক নাজমুল হাসান, কৃষক দল নেতা শাহজাহান সম্রাট প্রমুখ।