বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ হলেও রাজনীতিতে মানসিকভাবে সক্রিয় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার ১৩ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মানসিকভাবে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। আমাদের রাজনীতিতে তার প্রভাব রয়েছে। তিনি রাজনীতি থেকে যাননি, যাবেন না। তার অস্তিত্ব গভীরভাবে দেশের জনগণের মাঝে আছে। বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তার চিকিৎসার জন্য সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চিকিৎসার জন্য তার বিদেশে যাওয়াটা পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকলে দুষ্কৃতিকারীরা এমন নাশকতা চালায়, সরকারের কিছু এজেন্ট থাকে যারা স্যাবটাজ করে ভালো আন্দোলন বাধাগ্রস্থ করতে গাড়ি পুড়িয়ে নাশকতার সৃষ্টি করে, এমন নাশকতার তীব্র নিন্দা জানাই। সরকারের এজেন্ট আন্দোলন বাঁধাগ্রস্ত করতে গাড়ি পুড়িয়েছে এমন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রথমে এক-এগারোর সরকারের লক্ষ্য ছিলো মাইনাস টু। পরবর্তীতে তারা মাইনাস ওয়ান বাস্তবায়ন করেন। আর তাদের এ কাজে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন আওয়ামী লীগের নেতারা। সে সময় শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে এক-এগারোর সরকারের সকল কাজের বৈধতা দেবেন। সেজন্যই ক্ষমতায় এসেই সরকার বিএনপিকে নির্মূল করতে থাকে। ‘যা গণতন্ত্রের জন্য ভালো ফল আনেনি, আনবেও না। সুপরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে হরণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। যার ফলে সমগ্র গণতন্ত্র বাঁধাগ্রস্ত হয়। গণতন্ত্র না থাকলে জবাবদিহিতা নেই। এটাই বড় সমস্যা। কারো কোনো জবাবদিহি নেই।’
তিনি বলেন, বিএনপিতে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। প্রতি শনিবার বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিএনপি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। ‘বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য অন্তরায়’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য বড় অন্তরায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি নয়। তারাই দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, এ দেশের গণতন্ত্রের প্রধান অন্তরায় আওয়ামী লীগ নিজেই। বাকশাল গঠন করে তারাই এ দেশের গণতন্ত্রের কবর দিয়েছিল। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনসহ বিভিন্ন আইন করেছেন তারা। যা গণতন্ত্রের পক্ষে নয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বর্তমানে পলিটিক্যাল এজেন্ডা একটাই- প্রকৃত জনগণের সরকার, সংসদ। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ছাড়া কোনোভাবেই বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা প্রতিনিধিত্বশীল সরকার চাই। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সংসদে জনগণের কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় না। চার-পাঁচ মিনিটের মধ্যে আইন পাশ হয়। যা জনগণের কোনো কাজে লাগে না। ডিআরইউ’র সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মঈনুল আহসানের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ এবং মির্জা ফখরুলের জীবনী পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী। এসময় দফতর সম্পাদক মো: জাফর ইকবালসহ কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।