শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির জন্য সব নথি পাঠিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রেড নোটিশ জারি করার বিষয়টি খুব শিগগিরই নিশ্চিত করবে পুলিশ সদর দপ্তর। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে রেড নোটিশ এখনো দেখানো হয়নি। গতকাল রোববার (২২ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, জুলাই-আগস্টের গণহত্যা, পিলখানা হত্যাকা-, শাপলা চত্বরের হত্যাকা-সহ শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কাজ করা হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
তিনি বলেন, সারাদেশের আদালতে হওয়া মামলা আলাদাভাবে চলবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ করার জন্য কাজ করছে তদন্ত সংস্থা। আর ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি সরকারের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বলে জানান মো. তাজুল ইসলাম। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপরই পলাতক হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ও তার অবস্থান জানতে ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশ জারির আবেদন পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, রেড নোটিশ জারির বিষয়ে প্রসিকিউশনের কাছে কোনো তথ্য নেই। এটা জানবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পুলিশ হেডকোয়ার্টার। এর আগে গত ১০ নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখা এনসিবিতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করতে আবেদন করেন বলেও জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
গত ১০ নভেম্বর আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল গণমাধ্যমকে বলেন, শেখ হাসিনাসহ জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় অভিযুক্ত পলাতক সব আসামিকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে যাচ্ছে সরকার। এরপরে গত ১২ নভেম্বর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা গণহত্যা, গুমসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত এবং মামলার আসামি। তবে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন এবং বর্তমানে দেশের সীমানার বাইরে অবস্থান করছেন। এরকম একজন অপরাধীকে গ্রেফতার করতে বা তার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে ইন্টারপোলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভার সদস্য, পুলিশ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর শেখ হাসিনার বিষয়ে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন আদালত।