বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ ছিলো আওয়ামী হায়েনাদের দখলে আর আমাদের দখলে ছিল জেল খানা। ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর মধ্য রাতে আমাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে আয়না ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু মিডিয়া ও সংগঠন সক্রিয় থাকায় আমাকে তারা হজম করতে পারেনি। সুযোগ পেলে আমাকে তারা হজম করে ফেলতো। জাতিকে মুক্তির জন্য জেলের ভিতরে শোনা যেত কান্নার আওয়াজ। যারা বন্দি ছিলো তারা জানতো না বাংলাদেশ এত তাড়াতাড়ি আওয়ামী হায়েনার হাত থেকে মুক্ত হবে এবং বাংলাদেশ ২০২৪ এর ৫ আগস্ট আরেকবার স্বাধীন হবে। আল্লাহ তায়ালার একান্ত মেহেরবানিতে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। এদেশের মানুষ তাদের অধিকার আদয় করতে শিখেছে। আমরা বৈষম্য দুর করতে চাই, আমাদের সন্তানদের দাবি ছিল তাই, এজন্যে তারা গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিলো। আমরা ন্যায় বিচার চাই বৈষম্য দূর করতে চাই, সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চাই। আবু সাঈদ দিয়ে শুরু এ দিয়ে প্রায় দুই হাজারের মতো তাজা প্রান নির্মম নির্দয় পাষান শেখ হাসিনার সরকারের হাতে জীবন দিতে হয়েছে। দাবি আদায় করতে যেয়ে দু হাত মেলে দিয়ে আবু সাঈদ চিৎকার দিয়ে বলেছিল বুকের ভিতর দারুন ঝড় বুক পেতেছি গুলি কর গভীর আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলেছিল আমার দেশের মানুষ আমার বুকে গুলি ছুড়বে না, কিন্তু পর পর তিনটি গুলি ছুড়ে তাকে হত্যা করা হলো। এ হত্যা নিয়ে সরকার যখন ষড়যন্ত্র শুরু করলো তখন শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্ব ফুসে উঠলো। আবু সাঈদ হয়ে উঠলো বিশ্বব্যাপি প্রতিবাদের এক রোলমডেল। এ সময়ে তিনি আওয়ামী শাসন আমলে বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধংস ও অর্থ লুটপাটের তীব্র সমালোচনা করেন। আগামী বাংলাদেশ যুবকদের হাতে তুলে দিতে চাই। কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ, চোর, ডাকাতদের ক্ষমতায় দেখতে চাই না। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনার কয়রা উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে কপোতাক্ষ কলেজ মাঠে বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এদেশে যারা জন্মগ্রহণ করছে তারা সকলেই গর্বিত নাগরিক। এদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সকলে সমান। এই রাষ্ট্রে যদি আল্লাহ আমাদের দায়িত্ব দেয় তখন চাঁদাবাজ ও দখলদারদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো হবে। সেই সাথে দুর্নীতিমুক্ত প্রহসনমুক্ত বাংলাদেশ গড়া হবে। কয়রা উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক,কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক এবং খুলনা-৬ আসনে জামায়াতের এমপি প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা নায়েবে আমির মাওলানা গোলাম সরোয়ার, খুলনা জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারী মুন্সী মিজানুর রহমান, খুলনা -৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, সাতক্ষীরা -৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির উপাধাক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমির মোঃ রেজাউল করিম,জেলা সহকারী সেক্রেটারী এ্যাডভোকেট লস্কার শাহ আলম, খুলান জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু জামাতের সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী , খুলনা জেলা দক্ষিন জেলা ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি আবুজার গিফারী প্রমুখ। কর্মী সম্মেলনে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন জামায়াতের নেতৃবৃন্ধ বক্তৃৃতা করেন।