সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
উলিপুরে তিস্তা নদীর চরে সবুজের সমারেহ দাগনভূঞা ভূমি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ খুলনায় মাসব্যাপী একুশে বই মেলা শুরু শেখ হাসিনাকে দেশে এনে গণহত্যার বিচার করা ছাড়া বিএনপি ঘরে ফিরবে না-মামুনুর রশীদ মামুন শাহ এমদাদীয়া অটোমোবাইল ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলের সনদ বিতরণ গৌরীপুরে ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালে স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন দুপচাঁচিয়ায় কিশোর ব্যাটমিন্টনে চ্যাম্পিয়ান সজিদ-সীমান্ত ধনবাড়ীতে ব্রোকলি চাষে সাফল্য, আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের জনগণের সেবা নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করা একজন ইউএনও “রানীরবন্দরের ইতিহাস” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও দিনব্যাপী সাহিত্য আড্ডা-কবি ও বিশিষ্ট লেখক লুৎফর রহমানের

গৌরীপুরে ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালে স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন

ঝিন্টু দেবনাথ (গৌরীপুর) ময়মনসিংহ
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত, দেশ বরেণ্য চক্ষু চিকিৎসক, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. একেএমএ মুকতাদির এর আবিষ্কৃত চক্ষু চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১৩টি যন্ত্র ও গ্রাম বাংলার ব্যবহৃত বিলুপ্ত প্রায় জিনিসপত্র নিয়ে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে ডা: একেএমএ মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালে স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনী ও স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ও ডা. একেএমএ মুক্তাদিরের অর্ধাঙ্গিনী অধ্যাপিকা ডা. মাহমুদা খাতুন প্রধান অতিথি থেকে এই স্মৃতি জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন। ডা. একেএমএ মুকতাদির ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ও ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ডা. মুকতাদির চক্ষু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ও তার সহধর্মিণী ডা. মাহমুদা খাতুনের সহযোগিতায় ২০০৪ সালে নিজগ্রাম নয়াপাড়ায় এ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। অনুষ্ঠানে ডা. একেএমএ মুকতাদিরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম সাজ্জাদুল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. ইকবাল আহমেদ নাসের ও গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা মাযহারুর আনোয়ার। তাঁর তৈরি যন্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে অপথালমোস্কাপ, রেটিনোস্কোপ, ডিসিআর বোন ট্রিফাইন, কেপ্নটোপ্লাস্টি করনিয়াল ট্রিফাইন, হ্যান্ড হেল্ড সাইনোপটোফোর, পাংটাম ডাইলেটর, ল্যাক্রিমাল গ্রোব, রিভলজি ডিশন চার্ট, ট্রায়াল ফ্রেম, আইপিডি মাপার যন্ত্র। ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সালে তিনি এসব যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। এর মধ্যে ক্রায়ো এক্সট্রাক্টর যন্ত্রটি ১৯৬২ সালে ডা. চারিস ক্যালমেন প্রথম আবিষ্কার করেন। তখন এ যন্ত্রটির দাম ছিলো ৬ লাখ টাকা, যা এদেশের চিকিৎসকদের কিনে ব্যবহার করা অসম্ভব ছিল। ডা. একেএমএ মুকতাদির বলেন, “আমি সেই যন্ত্রটি দেখলাম, ব্যবহার করলাম। এর পর ৩ মাসের পরিশ্রমে দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে সেই যন্ত্রটি তৈরি করেছি; যা তরুণ ডাক্তাররা মাত্র ১ হাজার টাকায় কিনতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, সেটি ছিল ১৯৭৯ সাল। যন্ত্রটি তখন বিএসটিতে পেটেন্ট করি। এ নিয়ে ওএসবি জার্নালে আমার প্রথম পাবলিকেশন প্রকাশিত হয়। এ প্রযুক্তিটি ১৯৮৩ সালে জার্মানির সিমেন্স কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেই। এতে শুধু দেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চক্ষু চিকিৎসকরাও উপকৃত হন। স্মৃতি জাদুঘরে স্বাগত জানানো হয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ‘হুঁকা ও পানদানী’ দিয়ে। রয়েছে নানা সময়ের চশমা, মোমদানী, হারিকেন, কুপিবাতি, কলেরগান (গ্রামোফোন), হেজাকবাতি, করোসিন স্টোব, রেডিও, টেপ রেকর্ডার, হারমোনিয়াম, হাওয়াইয়ান গিটার, তবলা, টেলিফোন, ফ্যাক্স মেশিন, ট্রানজিস্টর ও কেসেটপ্লেয়ার, সাদা-কালো টিভি, টাইপ রাইটার, ভিসিআর ও ক্যাসেট, তারবিহীন ইন্টারকম, সিডি প্লেয়ার, ডিভিডি প্লেয়ার ইত্যাদি। এছাড়া তাকে ও তাঁর প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ৪৮ বছরের প্রকাশিত সংবাদপত্রের কাটিং। সর্বসাধারণের দেখার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে স্বাধীনতা পদক, ডা. মুকতাদিররের ব্যবহৃত স্বর্ণের, রূপার ও পিতলের কোর্টপিন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অর্ধশত কোর্টপিন এবং নবপ্রজন্মকে বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত করতে ৬২টি দেশের মুদ্রা রাখা হয়েছে। চিকিৎসায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০২০ সালে দেশের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা পদক পান। দেশে গ্রামীণ এলাকায় চোখের চিকিৎসায় অসামান্য অবদানের জন্য ভারতের বিলাসপুরে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া অফথালমোজিক্যাল সোসাইটি এর সম্মেলনে ‘গুরু পুজন অ্যাওয়ার্ড” অর্জন করেন। ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর তিনি ভারতের তিরুচিরাপল্লীতে অ্যাসোসিয়েশন অব কমিউনিটি অফথ্যালমলোজি ইন ইন্ডিয়া আয়োজিত অনুষ্ঠানে লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড, চক্ষু চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অ্যাওয়ার্ড, ২০০২ সালে লায়ন্স এফ্রিসিওয়ান অ্যাওয়ার্ড, ২০০৭ সালে এএফএও কর্তৃক ডিসটিনগিউজড সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড, একেদাস অ্যান্ডুমেন্ট অ্যাওয়ার্ড, ২০১৫ সালে ভারতে গোল্ড মেডেল, ২০১৭ সালে মাদার তেরেসা গোল্ড মেডেল, বীরাঙ্গনা সখিনা সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড-২০১৮” সহ দেশ ও বিদেশে ১৯টি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com