অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম এবং বেশি লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে ব্রোকলি চাষ করে সফল্যে পাচ্ছেন ধনবাড়ী উপজেলার কৃষকরা। এজন্য দিন দিন ধনবাড়ী উপজেলায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হইছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্রোকলি চাষ।তাই অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ব্রোকলি চাষের দিকে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। কৃষকদের আগ্রহ দেখে ব্রোকলির উৎপাদনে কৃষি বিভাগ এরই মধ্যে নিয়েছে নানা উদ্যোগ। জানা গেছে, ক্যান্সার প্রতিরোধী এই সবজি উন্নত বিশ্বে জনপ্রিয় হলেও দেশে এখনও পর্যন্ত খুব একটা জনপ্রিয় নয়। তবে ধীরে হলেও খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে সবজিটি। প্রথমদিকে এই সবজি চাষে কৃষকদের তেমন আগ্রহী না থাকলেও স্থানীয় কৃষি বিভাগের উদ্যোগে গত বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চাষের পর মিলেছে সাফল্য। এ বছর টাংগাইলে ধনবাড়ী উপজেলাতে বাণিজ্যিকভাবে ব্রোকলির চাষ করা হয়েছে। এই সবজি চাষে কৃষি অফিসের সহায়তায়, কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান ও ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গন। ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি ইউনিয়নের কামার পাড়া এলাকার ব্রোকলি চাষি মিলন বলেন, ইউটিউব দেখেই ব্রোকলি চাষে উদ্ধুদ্ধ হই। যদিও এ অঞ্চলে এটা খুব বেশি পরিচিত সবজি না। তাই ব্রোকলির বাজার নিয়ে প্রথমদিকে সন্দেহ ছিল। আমি ৭০ শতাংশ জমিতে রঙিন কপি চাষ করি তার মধ্যে ১৫ শতাংশ জমিতে ব্রোকলির চাষ করি। ১৫ শতাংশতে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে, তবে কপির বাজার খারাপ থাকায় চাহিদা তেমনটা নেই তবে অন্যান্য কপির চেয়ে ব্রকোলির দাম টা একটু ভালো পাচ্ছি এটা দিয়ে অন্য কপির আবাদের কামলা খরচ উঠতেছে। দাম ভালো থাকলে আগামীতে চাষের পরিমাণ আরো বাড়াবো। তিনি আরও বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। রোগ বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় এটি অনেকটাই কীটনাশকমুক্ত। বিঘা প্রতি উৎপাদনর খরচ কম। ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো চাষ করে সফলতা পাওয়ার পর বাণিজ্যিকভাবে ব্রোকলির চাষ করেছিলেন কৃষক মিলন । তিনি বলেন, প্রথমে ব্রোকলি চাষ করে তিনি কাঙ্খিত সফলতা পাননি। তারপরও হাল ছাড়েননি। এসময় পাশে এসে দাঁড়ান ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস। এরপরেই আসে সফলতা। তা দেখে উদ্বুদ্ধ হয় স্থানীয় কৃষকরা। লাভজনক এই সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তারা। এরপর থেকেই এখানে বাণিজ্যিকভাবে ব্রোকলির বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু হয়েছে। ধনবাড়ী উপজেলার কৃষকের মাঝে সম্ভাবনাময় এবং নতুন সবজি হিসেবে সাড়া ফেলেছে ব্রোকলি। ধনবাড়ী উপজেলার কৃষি উপ-সহকারী ফরিদ আহম্মেদ বলেন, কৃষকদের এই সবজি চাষে উদ্ধুদ্ধকরণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে। ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, এ সবজি চাষ একদিকে চাষিদের জন্য যেমন ইতিবাচক, তেমনি পুষ্টির চাহিদা পূরণেও সহায়ক। আমাদের প্রত্যাশা আগামীতে এ সবজির চাষ যেমন বাড়বে তেমনি এই সবজির চাষ সম্প্রসারণই এখন আমাদের কার্যক্রম।