শীত আগমনের শুরুতেই জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধপপাশা ঐতিহ্যবাহি দূর্গাসাগর দীঘিতে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠতে শুরু করেছে। জন কোলাহল মুক্ত এ দূর্গাসাগর দীঘিতে সাড়া বছরই কম বেশি বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি এসে ভিড় জমায়। তবে শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এ পাখির আনাগোনা বেড়ে যায়। মাধপপাশা দূর্গাসাগর দীঘির নজরদারিতে থাকা মো. জামাল, মো. সেলিম ও মো. বশির জানান, প্রায় দু’শ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহি দূর্গাসাগর দীঘি জেলা প্রশাসকের বিশেষ নজরদারির কারণে পাখি শিকার বা পাখিদের প্রতি বিরূপ আচরণ বন্ধ থাকায় বর্তমানে দীঘিটি পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। শীতের শুরুতে অতিথি পাখি আগমনে পাখি প্রেমিদের আকৃষ্ট করছে এ দূর্গাসাগর দীঘি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুধু জলাভূমির আকার ২৭ একর। পার্শ্ববর্তী পাড় ও জমির পরিমান প্রায় ৪৬ একর। ১৭৮০ সালে চন্দ্রদ্বীপের পঞ্চদশ রাজা শিব নারায়ন এ বিশাল জলধারাটি খনন করেন। তার স্ত্রী দূর্গামতির নামানুসারে-এর নাম করন করা হয় দূর্গাসাগর। এরপর ১৯৭৪ সালে তৎকালীন মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত’র উদ্যোগে মৃত প্রায় দীঘিটি পুনরায় খনন করা হয়। বর্তমানে ‘দূর্গাসাগর দীঘির উন্নয়ন ও পাখির অভয়ারণ্য’ নামে একটি প্রকল্পের অধীনে জেলা প্রশাসকদিঘিটির তত্ত্ববধায়ন করছেন। দূর্গাসাগর তীরের গাছ-গাছালীতে পাখি বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিসহ দীঘির দক্ষিণপাশে পদ্ম ও শাপলা ফুলের মনোরম দৃশ্যের কারণে দলে দলে ফিরে আসছে দর্শনার্থীরা।
এবিষয়ে একাধিক দর্শননার্থী জানায়, পদ্ম আর শাপলা ফুলের মধ্যে বসে চোখের আড়াল হয়ে যায় পাখিগুলো। তারা সেখানে বিভিন্ন পোকামাকড় এবং মাছ খায়। দিনরাত তাদের কলকাকলিতে দীঘি এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে এক ছন্দময় পরিবেশ। এতে মুদ্ধ দর্শনার্থীরা। শীতের প্রকোপ বাড়লে অতিথি পাখির বিচরণ আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন দর্শনার্থীরা।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, পাখির অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতিথি পাখি ছাড়াও দুর্গা সাগরকে দেশী প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শীতের পাখিসহ ঐতিহ্যবাহি দূর্গাসাগরের নৈসর্গিক পরিবেশ উপভোগের জন্য দর্শনার্থীদের স্বাগত জানান তিনি।- (বাসস)