পাটপণ্যের চাহিদা পূরণ ও রপ্তানির সুযোগ হাতছাড়া হলে তা হবে কর্মসংস্থান, শিল্প, অর্থনীতি ও জাতির জন্য আত্মঘাতী। দেশ ও বিশ্বব্যাপী পাটের চাহিদা পূরণে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো আধুনিকায়ন করে চালু করতে হবে।
গতকাল সোমবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্বব্যাপী পাটপণ্যের রপ্তানির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশকে দ্রুত বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে দুটি সংগঠন প্রস্তাব বিবেচনা করতে আহ্বান জানায়। প্রস্তাবগুলো হলো চীন সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে পাটকল আধুনিকায়ন ও চালু করা এবং শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কোপ) প্রস্তাবিত ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল আধুনিকায়ন করে চালু করা। এর মধ্যে ১৫ হাজার শ্রমিকের চাকরি নিশ্চিত হবে।
সংগঠনের আহ্বায়ক শহিদুল্লাহ চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অবিলম্বে আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু, ২০১৬ সালে অধিগ্রহণকৃত ছয়টি পাটকল ও সাতটি বস্ত্রকল আধুনিকায়ন করে চালু এবং রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের পাটকলশ্রমিকদের ও অধিগ্রহণকৃত পাটকল ও সুতাকলশ্রমিকদের পাওনা একসঙ্গে পরিশোধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কামরুল আহসান। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী পাটজাত পণ্যের বিপুল চাহিদার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত পাট ও পাটপণ্য উৎপাদনকারী প্রধানতম দুটি দেশ। ভারতের নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি করার মতো সামর্থ্য নেই। এই সম্ভাবনাকে তাই কাজে লাগাতে বাংলাদেশকে দ্রুত বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল। অথচ পাটশিল্প নিয়ে পূর্বাপর ভাবনাচিন্তা, গবেষণা, সার্ভে না করে এ সময় সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দিল। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সংগঠনের নেতারা বলেন, প্রয়োজন হলো পাটশিল্পের উৎপাদন বাড়াতে ও রপ্তানির পণ্য তৈরি করতে আগ্রাসী নীতি গ্রহণ। এই কাজে ব্যর্থ হওয়ার অর্থ হলো দেশের চাহিদা পূরণ ও রপ্তানির সুযোগ হাতছাড়া করা। এটি হাতছাড়া হলে তা হবে দেশের পাট ও পাটশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কর্মহীন করা। দেশের শিল্প, অর্থনীতি ও জাতির জন্য আত্মঘাতী। এ সময় যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউসুফ, আসলাম খান, কিশোর রায়, স্কোপ নেতা রুহাই হোসেনসহ দেশের বিভিন্ন পাটকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে দেশব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত রাখা এবং ২৪ জানুয়ারি অভ্যুত্থান দিবসে মহান অভ্যুত্থান ও পাটকলশ্রমিকদের ভূমিকা বিষয়ে দেশব্যাপী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়।