মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪১ অপরাহ্ন

আমাকে জেলের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, অনেকবার জেল খেটেছি — আবদুল কাদের মির্জা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২১

‘আমাকে জেলের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, অনেকবার জেল খেটেছি। আর মেরে ফেলবেন? সেটা শেষ। আমাদের পোস্টার বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীর লোকেরা ছিঁড়ছে না, ছিঁড়ছে ফেনী ও মাইজদী থেকে পাঠানো গুন্ডাপান্ডারা। যাঁরা অস্ত্র পাঠিয়েছেন, তাঁরা এগুলো করছেন আমাকে উত্ত্যক্ত করতে। আমি সাহস করে সত্য কথা বলেছি, বলব মৃত্যুর আগপর্যন্ত।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পথসভায় এসব কথা বলেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানসহ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আবদুল কাদের মির্জা দলের জেলা কমিটি নিয়ে ক্ষোভের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘কোম্পানীগঞ্জের সরকারি মুজিব কলেজে মুজিববাদী ছাত্রলীগের সাইনবোর্ড উঠিয়েছে কে, সাহাব উদ্দিন। আর এখন তাঁরা ত্যাগী নেতা নন, ত্যাগী নেতা জাবেদ (মিনহাজ আহমেদ জাবেদ), ত্যাগী নেতা মানিক (তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া)। আমরা যদি সত্যিকারের কাজের লোকের মূল্যায়ন না করি, বাজে লোকের সৃষ্টি হবে। ত্যাগী লোকের কথা না বললে ত্যাগী লোকের সৃষ্টি হবে না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘আমি এই নির্বাচনকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। বহিষ্কার করলে সে দিনের মতো সেখানে (জিরো পয়েন্ট) গিয়ে শুয়ে থাকব। কেউ সঙ্গে না গেলে একা থাকব। জেলে দিলে, আমি জেল ‘৮২ সাল থেকে খেটেছি। তিতা হয়ে গেছি জেল খাটতে খাটতে। এগুলোকে ভয় পেয়ে লাভ নাই।’
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনার শাহদাত হোসেন চৌধুরী সাহেবকে বলেছি, নিরপেক্ষ ভোট করে দেওয়ার জন্য। প্রশাসন আমার বিরুদ্ধে। আমি তাদের গোমর ফাঁস করে দিয়েছি। কিছু লোকের থেকে মাসোয়ারা খায়, তবে সবাই খারাপÍএটাও ঠিক নয়।’ তিনি বলেন, ‘এই প্রশাসন আজ মনে করে শেখ হাসিনাকে আমরা বানাইছি, যা ইচ্ছা তা করব। রাজনৈতিক নেতাদের দুর্নীতির বিচার হয়, এতে মানুষ খুশি। কিন্তু প্রশাসনের লোক যে এটার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার হয় না।’
মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আজ গরিব মানুষ সরকারি অফিসে গেলে দুই-তিন হাজার টাকা দিতে হয়। আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় কেউ কেউ আমাকে বলে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে আসতে। আমি কি পাগল হয়ে গেছি?’ একজন পুলিশ কত টাকা বেতন পায়? চাকরি নিতে তাকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়। একজন স্কুলের পিয়নকে চাকরি নিতে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়। সর্বত্র অনিয়ম। কবিরহাটে আমাদের কর্মীদের দিকে তাকানো যায় না। চার-পাঁচজন সব লুট করে খাচ্ছে। এই কথাগুলো আমি বললে অপরাধ। বলা যাবে না, আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র পাঠায়।’
প্রসঙ্গত, গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে ‘সত্য বচন’ অব্যাহত রেখেছেন আবদুল কাদের মির্জা। তাঁর বক্তব্য নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। এসব বক্তব্যে সুষ্ঠু নির্বাচন ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির গঠনে নানা অনিয়ম দূর করার দাবি জানান তিনি। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধেও সরব হন। এসব দাবিতে গত রোববার সমর্থকদের নিয়ে বসুরহাটের জিরো পয়েন্টে বঙ্গবন্ধু চত্বরে সমর্থকদের নিয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা অবস্থান করেন তিনি।
এই ‘সত্যবচন’ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেদিন আমি গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে এসেছি। এরপর তাঁর এসব কথা বলার কথা নয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আছেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন। এ বিষয়ে আমাদের কোনো কথা নেই।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com