নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বকেয়া বেতন ও বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে আদমজী ইপিজেডের কুনতং অ্যাপারেলস লিমিটেড (ফ্যাশন সিটি) কারখানার শ্রমিকরা। বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শ্রমিক বকেয়া বেতন, ভাতার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-ডেমরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় রাস্তার দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিলে তাদের সড়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু শ্রমিকরা বকেয়া না পাওয়া পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ তুলে নেবেন না বলে তারা সেখানে অনড় থাকে। পরে পুলিশ লাঠি চার্জ করে। এসময় পুলিশের সাথে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ বেশ কয়েকরাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের সড়ক থেকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে ১৫ শ্রমিক আহত হয়েছে দাবি করেছেন শ্রমিকরা। পরে রাস্তায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আদমজী ইপিজেডের কুনতং এপারেলস লিমিটেড (ফ্যাশন সিটি) গত বছরের ১০ আগস্ট দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করে ফ্যাক্টরিটি বন্ধ করে দেয়। সেই থেকে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে বন্ধ হওয়ার পরেও শ্রমিকদের ভাতা পরিশোধ করে আসছিল মালিক পক্ষ। তার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বেতন দেয়ার কথা থাকলেও গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ আগামী ১২ জানুয়ারি বেতন দেয়ার ঘোষণা দেয়। কিন্তু শ্রমিকরা এই ঘোষণা মেনে নেয়নি। বকেয়া বেতনের দাবিতে শনিবার শ্রমিকরা আদমজী ইপিজেডের গেইটের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। তাদের দাবি তাদের বকেয়া পাওনা, সাপ্তাহিক ছুটির দিনের ভাতাসহ বেশ কিছু বকেয়া পরিশোধ করতে টালবাহানা করছে মালিক পক্ষ। তাই তারা বাধ্য হয়ে আন্দোলন করতে রাস্তায় নেমে এসেছেন। কিন্তু পুলিশ বিনা উসকানিতে শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ করেছে এবং টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে আদমজী ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো. আহসান কবীরের মোবাইল ফোনে কয়েক দফায় একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, কারখানাটির মালিকপক্ষ লে অফ (বন্ধ) ঘোষণা করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ ও শিল্প পুলিশের কর্মকর্তারা যৌথভাবে মালিকপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়ার পরও শ্রমিকরা রাস্তা না ছাড়তে চাইলে তাদের ‘মৃদু লাঠি চার্জ’ করে সড়ক থেকে সড়িয়ে দেয়া হয়েছে।