দু’দপ্তরের ঠেলাঠেলিতে বরগুনার আমতলী ও তালতলী সড়কের আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর বেইলি ব্রীজের সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। দেবে যাওয়া ষ্টীলের পাটাতনের উপর কাঠের পাটাতন দিয়েছে স্থানীয়রা। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুই উপজেলার দুই লক্ষ মানুষ ও ঢাকাগামী পরিবহনসহ যানবাহন চলাচল করছে। গত এক মাস ধরে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী। দ্রুত ব্রীজ সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। জানাগেছে, আমতলী থেকে তালতলী উপজেলা সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম তালতলী সড়ক। ৪০ কিলোমিটার এই সড়কটির আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর উপর ১৯৮৫ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ বেইলি ব্রীজ নির্মাণ করে। এ ব্রীজ দিয়ে আমতলী ও তালতলী উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ পারপার হয়। দুই উপজেলার সেতুবন্ধন এই ব্রীজটি দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা ও তালতলীগামী পরিবহন বাস, তালতলী আইসোটেক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাভার ভ্যান, ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাহেন্দ্র, ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও মোটর সাইকেলসহ সহ¯্রাধীক গাড়ী পারাপার হয়। গাড়ী চলাচল করায় দিন দিন পুরাতন ব্রীজটি নড়বড়ে হয়ে গেছে। ব্রীজের পাটাতন আলগা হয়ে সরে গেছে। ব্রীজে ছোট গাড়ী উঠলেও ঠকঠক শব্দ করে নড়ে। ব্রীজের মাঝখানের পাটাতন দেবে গেছে। গত পাঁচ বছর ধরে বেইলি ব্রীজের এমন বেহাল দশায় পড়ে আছে। কিন্তু সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠেলাঠেলিতে ব্রীজের সংস্কার কাজ হচ্ছে না। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দাবী আমতলী-তালতলী সড়ক ও ব্রীজ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর দাবী করেছে ওই সড়ক ও ব্রীজ কাগজে কলমে এখনো পায়নি। ফলে দুই বিভাগের ঠেলাঠেলিতে ব্রীজের সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে গত ৪ জানুয়ারী ব্রীজের পাটাতন ভেঙ্গে যাওয়ায় ১৬ দিন ধরে আমতলী-তালতলীর সাথে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা ওই ব্রীজের ষ্টীলের পাটাতনে কাঠের পাটাতন দিয়ে সংস্কার করায় স্বল্প পরিসরে ছোট যান চলাচল করছে। এতে জন দুর্ভোগে পরেছে দুই উপজেলার দুই লক্ষাধীক মানুষ। বন্ধ হয়ে গেছে তালতলী থেকে ঢাকাগামী পরিবহন, আইসোটেক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাচামাল সরবরাহ কাভার ভ্যানসহ সকল ভারী যানবাহন। দীর্ঘদিন ব্রীজটি সংঙ্কার না করায় মারাত্মক দূর্ঘটনার আশঙ্কা করেছে এলাকাবাসী। দ্রুত ব্রীজ মেরামত করে চলাচলের পথ সুগম করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, ব্রীজের মধ্যখানের পাটাতন দেবে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। স্থানীয়রা দেবে যাওয়া পাটাতনে কাঠের পাটাতন দিয়ে মেরামত করে দিয়েছে। এতে ওই ব্রীজ দিয়ে ছোট যানবাহন চলাচল করছে। আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ হুমায়ূন কবির হাওলাদার বলেন, স্থানীয় প্রকৌশলী বিভাগ ও সড়ক জনপথ বিভাগের ঠেলাঠেলিতে ব্রীজের সংস্কার কাজ হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পরেছে দুই উপজেলার অন্তত দুই লক্ষ মানুষ। দ্রুত ব্রীজ মেরামতের করে যানবাহন চলাচলের পথ সুগম করার দাবী জানাই। তালতলীর গাবতলী গ্রামের মোঃ মতিয়ার রহমান খান বলেন, ব্রীজে গাড়ী উঠলে ব্রীজ ঠকঠক করে। মনে হয় এখই ব্রীজ নদীতে ভেঙ্গে পরবে। দ্রুত ওই ব্রীজটি নির্মাণের দাবী জানাই। বাস গাড়ী চালক মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, ব্রীজ মেরামতের কাজ না হওয়ায় গাড়ী নিয়ে তালতলী যেতে পারছি না। দ্রুত ব্রীজ মেরামতের দাবী জানাই। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, আমি আমতলী এবং তালতলী দুই উপজেলার দায়িত্বে আছি। ওই ব্রীজের দুরাবস্থার চিত্র প্রতিদিনই আমি প্রত্যক্ষ করি। ওই ব্রীজ নির্মাণের জন্য আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তিনি আরো বলেন, ব্রীজ নির্মাণের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফোরকান আহম্মেদ বলেন, ওই সড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই সড়কের সকল ব্রীজ তারা সংস্কার করবে। এখানে আমার কিছুই করার নেই। বরগুনা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জমান বলেন, ওই ব্রীজের দুরাবস্থার খবর জানি কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ওই সড়কটি সওজকে হস্তান্তর করলে ব্রীজ সংস্কারের দায়িত্ব আমার উপরে বর্তাতো। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সড়কটি এখন সওজকে দেয়নি।