গতকাল ২৬ জানুয়ারি ছিল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চুয়াত্তরতম জন্মদিন যে কোনও মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। রাজনীতিবিদদের জন্য তো অবশ্যই। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল মঙ্গলবার এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। কিন্তু, বিএনপির মহাসচিব হওয়ার পরেও কোনও আয়োজন নেই তার জন্মদিনকে ঘিরে। দলীয় নেতারা শুধু শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ও জানাবেন তাকে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, ১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জন্মগ্রহণ করেন। মুক্ত তথ্যভা-ার উইকিপিডিয়া ঘেঁটে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতির স্নাতক মির্জা ফখরুল। সেখানেই সম্পন্ন করেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালেই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ছিলেন তুখোড় ছাত্রনেতা। ‘৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানের সময় ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিসিএস দিয়ে হয়ে যান সরকারি চাকুরে। অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা জীবন শুরু করলেও কয়েকটি কলেজ ঘুরে পরে সরকারের পরিদর্শন ও আয়-ব্যয় পরীক্ষণ অধিদফতরে নীরিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। তবে সাত বছরের মধ্যে রাজনীতিতে আবারও ফিরে আসেন। জিয়াউর রহমান সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী এস. এ. বারীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে ক্ষমতার পালাবদল ঘটলে নিজ জেলায় ফিরে আবারও শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন। ১৯৮৮ সালে আবারও শিক্ষকতা ছেড়ে সার্বক্ষণিক রাজনীতিতে ফেরার প্রস্তুতি নেন। নির্বাচিত হন ঠাকুরগাঁও পৌরসভার চেয়ারম্যান। এক বছর পরে যোগ দেন বিএনপিতে। ১৯৯১ ও ১৯৯৯ সালে বিএনপির টিকিটে জাতীয় সংসদে নির্বাচন করে জয় না পেলেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০০১ সালে। চারদলীয় জোট সরকারের এই শাসনামলে প্রথমে কৃষি মন্ত্রণালয় ও পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ২০১৬ সালে বিএনপির মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ২০০৯ সালে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়ে বিরোধীদলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের মার্চে দলের মহাসচিব খন্দকার দেলওয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর তিনি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পান। এ দায়িত্বও পালন করেন টানা পাঁচ বছর। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার একটি আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলেও সংসদে যোগ দেননি ফখরুল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মির্জা ফখরুলের জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ কোনও আয়োজন নেই। দলীয় সূত্র জানায়, তার জন্মদিনে কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও আয়োজন করা হয়নি। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।