দেশের উদ্বৃত্ত ধান উৎপাদনের জেলা নওগাঁ’র মাঠে মাঠে এখন বোরো ধান রোপনের মহোৎসব চলছে। জেলার ১১টি উপজেলার অবারিত ফসলের মাঠ জুড়ে ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। জমিতে পানি সেচ, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন এবং সেই চারা তৈরী জমিতে রোপনের কাজ চলছে পুরোদমে। এসব মাঠে কেবলই কলের লাঙ্গলের শব্দ, কোথাও গরুর পায়ে পানির ঝপ ঝপ শব্দ, কৃষান কৃষানীদের গুন গুন গানে মুখরিত। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শামসুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন যদিও চলতি বোরো মওসুমে জেলায় বোরো চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৬শ ২৫ হেক্টর জমিতে। বিগত আমন মওসুমে কৃষকরা ধানের নায্য মুল্য পাওয়ার ফলে বোরো মওসুমে এই লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি জানান ২৬ জানুয়ারী পর্যন্ত ৮৫ হাজার ৬শ ৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন সম্পন্ন হয়েছে। চলতি মওসুমে কৃষকরা হাইব্রীড এবং উন্নত ফলনশীল উফশী জাতের ধান রোপন করছেন। হাইব্রীড জাতের মধ্যে সিনজেনটা-১২০৩ ও ছক্কা এবং উফশী জাতের মধ্যে কাটারী, ব্রি-ধান ২৮, ব্রি-ধান ২৯, ব্রি-ধান ৫০, ব্রি-ধান ৮১, জিরাশাইল ইত্যাদি ধান রোপন করছেন জেলার কৃষকরা। কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে চলতি মওসুমে জেলায় মোট ১ লাখ ৮০ হাজার ৬, ২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রীড জাতের ১১ হাজার ৭শ ১০ হেক্টর এবং ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯শ ১৫ হেক্টর উন্নত ফলনশীল উফশী জাতের। চালের আকারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ৫৮ হাজ্রা ৬শ ৯৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হাইব্রীড জাতের ৬২ হাজার ৭শ ৬৬ মেট্রিক টন এবং উফশী জাতের ৬ লক্ষ ৯৫ হার্জা ৯শ ৩০ মেট্রিক টন। উপজেলা ভিত্তিক বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা হচ্ছে নওগাঁ সদর উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৩ হাজার ১শ২৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ১৪ হাজার ৮শ ৩০ হেক্টরসহ মোট ১৭ হাজার ৯শ ৫৫ হেক্টর। রানীনগর উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৭৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ১৮ হাজার ১শ ২৫ হেক্টরসহ মোট ন১৮ হাজার ২শ হেক্টর। আত্রাই উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৩ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর ও উ‘ফশী জাতের ১৫ হাজার ৩৫ হেক্টরসহ মোট ১৮ হাজার ৮শ ৮৫ হেক্টর। বদলগাছি উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ২৪৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ১০ হাজার ৭শ ৪৫ হেক্টরসহ মোট ১০ হাজার ৯শ ৯০ হেক্টর। মহাদেবপুর উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ২৮০ হেক্টর ও উফশী জাতের ২৬ হাজার ৩শ ২০ হেক্টর। পত্নীতলা উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ১৩০ হেক্টর ও উফশী জাতের ১৯ হাজার ২শ ৬০ হেক্টর। ধামইরহাট উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ১ হাজার ৩শ ৪৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ১৪ হাজার ৬শ ৬০ হেক্টর। সাপাহার উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ১০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৫ হাজার ৪শ ৪৫ হেক্টর। পোরশা উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ৫২৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ৭ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর। মান্দা উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ২ হাজার ১শ ১৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ১৭ হাজার ৭শ ৩৫ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় হাইব্রীড জাতের ১০ হেক্টর ও উফশী জাতের ১৯ হজার ২শ ৪০ হেক্টর।