সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০১ পূর্বাহ্ন

আজ বিশ্ব হিজাব দিবস

ফাতিমা আজিজা:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১

আজ ১ ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব হিজাব দিবস। মুসলিম নারীদের একটি বিশেষ পোশাক হিজাব। একই সাথে এটি ইসলামী সংস্কৃতি ও সভ্যতারও প্রতীক। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে নিজেদের সম্মান এবং মর্যাদা রক্ষার মাধ্যম হিসেবে মুসলিম বিশ্বে এই পোশাকটির রয়েছে বিশেষ পরিচিতি। সেক্যুলারিজম প্রসার পাওয়া সত্ত্বেও বিশ্বজুড়ে হিজাব পরিহিত নারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রুচির সাথে মানানসই অথচ মার্জিত ও শালীন পোশাক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় হিজাবের প্রতি রয়েছে নারীদের ব্যাপক সমর্থন ও আকর্ষণ।
এ হিজাবকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এবং পর্দার ব্যাপারে ইসলামী বিধান অনুসরণকারী সব মুসলিম নারীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য গত ৮ বছর ধরে নিউ ইয়র্কে নানা রকমের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’। প্রতি বছরের মতো এবারও ১ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে পালিত হবে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’।
হিজাব দিবসের সাথে ইতোমধ্যে সংহতি প্রকাশ করেছেন ৪৫টি দেশের ৭০ জনের অধিক রাষ্ট্রদূত, খ্যাতনামা রাজনীতিক ও স্কলারসহ টাইম ম্যাগাজিন, সিএনএনের মতো বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যম। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ওয়ার্ল্ড হিজাবডে ডট কম পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, শতকরা ৯৪ ভাগ নারী হিজাবে নিজেদেরকে নিপীড়িত মনে করেন না। শতকরা ৯৩ ভাগ নারী মনে করেন তাদের ওপর হিজাব চাপিয়ে দেয়া হয়নি।
হিজাব মেয়েদের অনন্য নিরাপত্তা: এখন বাঙালিদের মধ্যে হিজাব পরিধান করার প্রবণতা একটু বেশি। হোক তা জেনে বুঝে বা আকর্ষণীয় হওয়ার জন্য। তবে এটুকু বলা যায় যে, হিজাবে নারীরা নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পছন্দ করে। অবশ্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা বিষয়টি একটি অবাস্তব কল্পনার মতোই। তবে বিশ্ববাসীর কাছে হিজাব সত্যিই একটি অমূল্য রতœ। যেমন হীরার মূল্য অনেক বেশি তেমনই বিশ্বের কাছে আজ হিজাবি নারীর মূল্য বাড়তে শুরু করেছে। বিশ্বের সর্বত্র আজ নারীরা ভাবে তাদের সেফটির জন্য হিজাবের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মুসলিম হিসেবে একজন নারী অবশ্যই ইসলামের নির্দেশ বা ফরজ বিধান হিসেবে হিজাবকে নিজের বাধ্যতামূলক করে নেবে। আর সেইফটির জন্য হিজাব পরিধান করবে দ্বিতীয় পদক্ষেপে। কারণ ইসলামের নির্দেশ কুরআনের ভাষায়, ‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনা নারীদেরকে বলো, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (সূরা আল আহজাব ৫৯)। অনেক সুন্দরভাবে আল্লাহ্ নারীদের জন্য পথ বাতলে দিয়েছেন, যেন তারা সুরক্ষিত থাকে। মূলত কুরআনের ভাষায় বলা হয়েছে, চাদরের মতো করে নিজেদের আবৃত করাই পর্দা বা হিজাব। আর আল্লাহ্ যা বলেছেন আর নির্দেশ দিয়েছেন নিশ্চিতরূপে তাতেই কল্যাণ অবধারিত। সেই হিজাব বা পর্দাই একজন নারীর সেইফ গার্ড হিসেবে কাজ করবে। কারণ, এটি স্বয়ং আল্লাহর ইচ্ছা এবং আদেশ। আর এই আদেশের বিপরীতে যারা নিজেদের প্রদর্শন করে চলবে তাদের জন্যই কঠিন শাস্তি দুনিয়ার অবমাননা এবং আখিরাতের আজাব। ‘আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার (ইচ্ছা) করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে’ (সূরা আল-আহজাব : ৩৬)। সুতরাং,আল্লাহর নির্দেশ ও রাসূল সা:-এর নিয়ম অমান্য করার কারণে অবশ্যই সব জাতি পথভ্রষ্ট হবে। আর হিজাব যেহেতু নারীদের জন্য, অবশ্যই নারী জাতি বিপদগ্রস্ত হবে যদি হিজাব বা পর্দা অমান্য করে।
শুধুই এক টুকরো কাপড় কখনো হিজাবের অন্তর্ভুক্ত নয়। আর যখন রাষ্ট্র কিংবা পরিবারের মূল ভিত্তি হিজাব বা পরিপূর্ণ পর্দার মাধ্যমে গঠিত হবে, তখনই হিজাব নারীর জন্য সেইফ গার্ড হবে। কিন্তু যখন রাষ্ট্রের নিয়ম হবে নারীদের বহির্জগতে টেনে আনা আর পর্দা লঙ্ঘিত চলাফেরা। তখন, শুধু এক টুকরো কাপড় নারীকে কোনোভাবেই নিরাপত্তা দিতে পারবে না। বরং নিয়ম হওয়া চাই নারীদের পরিপূর্ণ হিজাব বা পর্দা রক্ষার জোরপূর্বক নির্দেশনা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com